দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় গুলি বৃষ্টি থেকে কভার নিতে ছাতা

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সেকেন্ড প্যারাসুট ব্রিগেড এর কোম্পানি কমান্ডার ব্রিটিশ মেজর 
Digby Tatham-Warter তার অধীনস্থ এক আহত সোলজারকে জার্মান এসএস দের গুলি বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে নিজের ব্যক্তিগত ছাতা দিয়ে কাভার দিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসেন....
তুমুল গোলাগুলির মাঝে তার এই পাগলামি দেখে প্রতিপক্ষ জার্মানরা হা করে তাকিয়ে থেকে গুলি করতেই ভুলে গিয়েছিল তখন....
(হয়তো ভেবেছিল Kingsman মুভির বুলেটপ্রুফ ছাতা😆😆)

সেই লেভেলের cool এই ব্রিটিশ এয়ারবোর্ন অফিসার সম্পর্কে জানা যায় যে তিনি বৃষ্টিকে খুবই অপছন্দ করতেন।তাই তিনি সবসময় সাথে ছাতা রাখতেন।এমনকি প্যারাজাম্পিং এর সময় ও...😲😷
(হয়তো এক্সট্রা প্যারাসুট হিসেবে ছাতা রাখতেন 😂😂)

সংক্ষেপে জেনে নিই অপারেশন মার্কেট গার্ডেন সম্পর্কে:
সেকেন্ড ওয়াল্ড ওয়্যার এর দুর্ধর্ষ সমরনায়ক ফিল্ডমার্শাল মন্টেগোমারি(তখন ছিলেন জেনারেল) সিদ্ধান্ত নিলেন যে
Rhine নদীর উপরের Arnhem ব্রিজ টা মিত্রবাহিনীর দখলে নিয়ে নিবেন এবং ব্রিজে বাড়তি আর্মার লাগাবেন জার্মান এয়ার এসল্ট প্রটেকশন এর জন্য।এজন্য তিনি সেকেন্ড প্যারাসুট রেজিমেন্ট কল করেন।কেননা স্থলপথে আক্রমণ করা সময়সাপেক্ষ ছিল।তাই তিনি এন্ট্রি পার্টি হিসেবে এই এয়ারবোর্ন ব্রিগেড প্রেরণ করেন এবং ব্যাকআপ হিসেবে ট্যাংক সহ আর্মার্ড রেজিমেন্ট ও প্রেরণ করেন।এয়ারবোর্নদের দায়িত্ব ছিল ব্রিজটা দখল করে ৩৬ঘন্টা পর্যন্ত দখলদারিত্ব ধরে রাখা।
.
মিত্রবাহিনীর এই অপারেশনের কথা জেনে হিটলারের তখন #চান্দি গরম টাইপ অবস্থা...
তার জেনারেলরা চান্দি ঠান্ডা করার জন্য দ্রুত নাইনথ প্যানজার ডিভিশন এর একটি ইউনিট এবং এসএস ব্যাটালিয়ন প্রেরণ করেন ব্রিজ দখল করতে।

মেজর Digby Tatham-Warter এর দলের কপাল খারাপ এমনটা বলা যাবেনা।কেননা প্যারাসুট নিয়ে ব্রিজ এর মত ছোট একটা ড্রপজোনে স্পট জাম্প করা চাট্টিখানি কথা নয়।ফলাফল তার দলের বেশিরভাগ সোলজার ব্রিজ থেকে দূরে ল্যান্ড করেন,কেউ কেউ পানিতেও কয়েকদফা চুবানি খান 😂

তারা কোনো রকমে সংঘটিত হওয়ার আগেই যমদূত এর মত হাজির জার্মান ট্যাংক 😭
তুমুল গুলি বৃষ্টিতে ব্রিটিশ এয়ারবোর্ন এর হালুয়া টাইট করে দেন জার্মান এসএস রা...
ফলে বাধ্য হয়ে লেজ তুলে পালাতে হয় মেজর Digby Tatham-Warter এর দলকে।
যদিও ফিল্ডমার্শাল মন্টেগোমারির নির্দেশ ছিল শেষ বুলেট ফায়ারিং এর আগ পর্যন্ত পজিশন দখলে রাখতে হবে কিন্তু রিয়েল টাইম ব্যাটল সিচুয়েশন বুঝে নিজের সোলজারদের জীবন বাঁচানোর জন্য তিনি খানিকটা পিছু হটেন।ছাতা দিয়ে কাভারিং এর কথা তো আগেই বললাম।

পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফ্রস্ট এর নেতৃত্বাধীন ব্রিটিশ ব্যাকআপ ফোর্স আসলে পুনরায় আক্রমনে যোগ দেন কিন্তু জার্মান কাউন্টার এট্যাকে ব্রিটিশ টিমের অবস্থা একদমই খারাপ হয়ে যায়।তিন দিন চার রাত ব্রিজের দুই প্রান্ত থেকে সমানতালে গুলি চলছিল।

খেয়াল করে দেখুন ইনফরমেশন এর চেয়ে বড় কোনো অস্ত্র থাকতে পারে না।মিলিটারি ইন্টিলিজেন্স এর মাধ্যমে জার্মানরা
ব্রিটিশ প্যারাসুট ব্রিগেড আসার আগেই ব্রিজ দখলে নিয়ে তাদের আপ্যায়ন(!) করার আয়োজন করে।পরবর্তীতে ব্রিটিশ ব্যাকআপ টিম আসবে এমনটা খবর পেয়ে অথবা আন্দাজ করে নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করে জার্মানরা।

ফলাফল:
তুমুল যুদ্ধের পরও ব্রিজ দখল করতে ব্যর্থ হয়ে অস্ত্র,গোলাবারুদ,সোলজার এবং খাদ্যের অভাবে চূড়ান্ত ভাবে পিছু হটে ব্রিটিশ ফোর্স।

পুনশ্চ:
সেই মেজর Digby Tatham-Warter
আহত অবস্থায় ধরা পড়েন জার্মানদের হাতে।তার ছাতা কাণ্ডে অভিভূত হয়ে জার্মান অফিসাররা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান।কিছুদিন পর তিনি হাসপাতালের জার্মান গার্ডদের মুলা দেখিয়ে হাসপাতাল থেকে পলায়ন করেন 😆😆
Powered by Blogger.