আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেলের ভিড়ে “বোল্ট অ্যাকশন সার্ভিস রাইফেল”
বর্তমান সময়ের আধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেলের ভিড়ে বোল্ট অ্যাকশন সার্ভিস রাইফেলের কথা বললেই বেশিরভাগ লোকের মনে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশ পুলিশের ব্যবহৃত লি-এনফিল্ড থ্রি নট থ্রি যাকে অনেকেই আদর করে হোক বা যেকোন কারণেই হোক 'গাদা বন্দুক' (
) বলে ডাকে সেটির ছবি ভেসে ওঠে এবং তাদের বেশিরভাগের মতামত এইগুলো কোন কাজেরই নয়, এদের দ্বারা কিচ্ছু করা সম্ভব নয়, একটা গুলি করার আগেই খেল খতম। কিন্তু বাস্তবতা বড়ই ভিন্ন, মানব জাতির ইতিহাসের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ীযুদ্ধের বেশিরভাগই কিন্তু এই অস্ত্রগুলোর দ্বারাই করা হয়েছে। এদের গুলিতে যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে আর সকল অস্ত্রের সাহায্যে সম্মিলিত ভাবেও এত লোক প্রাণ হারিয়েছে কি না সেটিও কিন্তু গবেষণা করার মতো একটি বিষয় বটে। তো উপরের প্যাচালের মাধ্যমে নিশ্চই বুঝতে পারছেন আজকে এদের সম্পর্কেই কিছু আলোচনার চেষ্টা করা হইবে। তো অনেক রকমের বোল্ট অ্যাকশন সার্ভিস রাইফেল থাকলেও বিখ্যাত রাশান রাইফেল দিয়েই শুরু করা যাক যেহেতু আমাদের দেশের লোকজনের কোন এক অজ্ঞাত কারণে রাশিয়ার প্রতি টানটা একটু বেশিই। দুই দুইটি মহাযুদ্ধে রাশা বা সোভিয়েত যাই বলি না কেন তাদের প্রধান রাইফেল ছিল মসিন নাগান্ট, অবশ্য শুধু মসিন নাগান্ট বললে ভূল হবে কারণ মূল মেকানিজম এক হলেও এই রাইফেলটির শত শত সংস্করণ রয়েছে। এই সকল সংস্করণের মধ্যে কোনটি সবচেয়ে ভালো এ নিয়ে মতবিরোধ থাকলেও বেশিরভাগ লোকই মত দিবেন এম২৮-৩০ ভার্সনটি অন্যান্যগুলোর তুলনায় কিছুটা উন্নত। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে এই এম২৮-৩০ মসিনগুলো কিন্তু আদৌ সোভিয়েত বা রাশানরা ব্যবহার করতো না বরং এগুলো সোভিয়েত নিধনেই ব্যবহার করা হতো
।
এই এম২৮-৩০ রাইফেলগুলো ছিল মূলত ফিনিশদের মডিফায়েড ভার্সন। যখন রাশা জার আলেক্সান্ডার নিকোলায়েভ রোমনভের দ্বারা শাসিত হতো তখন ফিনল্যান্ড রাশার একটা অংশ ছিল ফলে তাদের সামরিক বাহিনী স্বভাবতই মসিন নাগান্টের বেসিক এম৯১ ভার্সনটি ব্যবহার করত এবং মোটামুটি আধুনিক হওয়ায় এবং প্রচুর পরিমাণে মজুদ থাকায় স্বাধীনতার পরও তারা এগুলোই ব্যবহার করতে থাকে।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় যখন ইউরোপ জুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে আর ফিনল্যান্ড যেহেতু জারের অধীনে ছিল তাই বাপের সম্পত্তি ভেবে সোভিয়েতরা ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে বসে যা ইতিহাসে 'উইন্টার ওয়ার' বলে পরিচিত। তো এইসময় ফিনিশরা আবিষ্কার করে এই পরিবেশে এবং এই পরিস্থিতে তাদের এম৯১ গুলো খুব একটা ভালো পার্ফমেন্স দেখাতে পারছে না কিন্তু যেহেতু যুদ্ধ চলছে তাই একেবারে নতুন রাইফেল তৈরী করলে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে যা সমাধান করা সময়সাপেক্ষ আর ফিনদের এই জিনিসটার বড় অভাব।
তাই তারা স্টকে থাকা রাইফেলগুলো আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এজন্য তারা দ্বারস্থ হয় ইউরোপে অস্ত্র তৈরীতে প্রসিদ্ধ কিছু কম্পানির যেমন সিগ, মাউজার, স্যাকো, টিক্কাকস্কি ইত্যাদির কাছে। তারা তাদের রাইফেলে আরও টাইট বোরের হেভি ব্যারেল, ভালো ট্রিগার ও কাঠের ফ্রেমে কিছুটা পরিবর্তন করে ফলে রাইফেলগুলো লং রেঞ্জে আরও অ্যাকুরেট হয়ে ওঠে। টাইট বোরের ফলে গুলির ভেলোসিটি আর রেঞ্জ দুটিই বৃদ্ধিপায়, হেভি ব্যারেল পাউডার বার্নের ফলে সৃষ্ট বিষ্ফোরণের কম্পন আরও ভালোভাবে সহ্য করতে পারে যা লং রেঞ্জ শুটিংএর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, ভালো ট্রিগার মেকানিজম রাইফেলের অ্যাকুরেসি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে আর ফ্রেমে পরিবর্তনের ফলে সৈন্যরা আরও ভালোভাবে রাইফেল ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।
এইসকল কারণে এই আদ্দিকালের এম২৮-৩০ গুলো প্রায় ২ কিলোমিটার রেঞ্জের ভেতর থাকা যেকোন রক্তমাংসের টার্গেটকে অনায়াসে পরকালে পাঠিয়ে দিতে পারে। আর নতুন রাইফেল না বানিয়ে পুরাতন গুলো ব্যবহারে সুবিধা হয় এই যে, তারা আর সোভিয়েতরা যেহেতু একই রাইফেল ব্যবহার করছে তাই তারা সোভিয়েতদের কাছথেকে লুট করা গুলি দ্বারাই যুদ্ধ চালাতে সক্ষম হয়। ফিনিশদের সোভিয়েতদের মিলিটারি কোড সম্পর্কে ধারণা থাকায় ভূয়া মেসেজ পাঠিয়ে অনেক সময় তারা সোভিয়েতদের কাছ থেকেই সাপ্লাই এয়ার ড্রপ করাতো যাতে সেগুলো দ্বারাই আবার তারা সোভিয়েতদের মারতে পারে (মাছের তেলে মাছ ভাজা আরকি
)।
যারা স্নাইপিং সম্পর্কে খোজ খবর রাখেন তারা সিমো হায়হা বা দ্যা গ্রেট হোয়াইট ডেথ সম্পর্কে জানেন না এমনটা সম্ভব নয়, সেই হোয়াইট ডেথ অনেকগুলো বন্দুক ব্যবহার করলেও বেশিরভাগ সময়ই কিন্তু এই এম২৮-৩০ ব্যবহার করতেন যা এর মান কতটা ভালো ছিল তার একটি অনন্য উদাহরণ। যাই হোক এই রাইফেলগুলোর মান ভালো হলেও রেড আর্মির বিশাল সৈন্য সম্ভার ও অস্ত্রশস্ত্রের সামনে ফিনিশরা টিকতে পারেনি কিন্তু তারা মূল নির্মাতার চেয়ে ভালো মানের অস্ত্র তৈরী করে পৃথিবীর সামনে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে গিয়েছে যে স্মার্টফোন প্রথম পশ্চিমা বিশ্বে তৈরী করা হলেও দূর প্রাচ্যে তৈরী স্মার্টফোনগুলোও কিন্তু খারাপ নয়.....



এই এম২৮-৩০ রাইফেলগুলো ছিল মূলত ফিনিশদের মডিফায়েড ভার্সন। যখন রাশা জার আলেক্সান্ডার নিকোলায়েভ রোমনভের দ্বারা শাসিত হতো তখন ফিনল্যান্ড রাশার একটা অংশ ছিল ফলে তাদের সামরিক বাহিনী স্বভাবতই মসিন নাগান্টের বেসিক এম৯১ ভার্সনটি ব্যবহার করত এবং মোটামুটি আধুনিক হওয়ায় এবং প্রচুর পরিমাণে মজুদ থাকায় স্বাধীনতার পরও তারা এগুলোই ব্যবহার করতে থাকে।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় যখন ইউরোপ জুড়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বেজে ওঠে আর ফিনল্যান্ড যেহেতু জারের অধীনে ছিল তাই বাপের সম্পত্তি ভেবে সোভিয়েতরা ফিনল্যান্ড আক্রমণ করে বসে যা ইতিহাসে 'উইন্টার ওয়ার' বলে পরিচিত। তো এইসময় ফিনিশরা আবিষ্কার করে এই পরিবেশে এবং এই পরিস্থিতে তাদের এম৯১ গুলো খুব একটা ভালো পার্ফমেন্স দেখাতে পারছে না কিন্তু যেহেতু যুদ্ধ চলছে তাই একেবারে নতুন রাইফেল তৈরী করলে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে যা সমাধান করা সময়সাপেক্ষ আর ফিনদের এই জিনিসটার বড় অভাব।
তাই তারা স্টকে থাকা রাইফেলগুলো আপগ্রেড করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং এজন্য তারা দ্বারস্থ হয় ইউরোপে অস্ত্র তৈরীতে প্রসিদ্ধ কিছু কম্পানির যেমন সিগ, মাউজার, স্যাকো, টিক্কাকস্কি ইত্যাদির কাছে। তারা তাদের রাইফেলে আরও টাইট বোরের হেভি ব্যারেল, ভালো ট্রিগার ও কাঠের ফ্রেমে কিছুটা পরিবর্তন করে ফলে রাইফেলগুলো লং রেঞ্জে আরও অ্যাকুরেট হয়ে ওঠে। টাইট বোরের ফলে গুলির ভেলোসিটি আর রেঞ্জ দুটিই বৃদ্ধিপায়, হেভি ব্যারেল পাউডার বার্নের ফলে সৃষ্ট বিষ্ফোরণের কম্পন আরও ভালোভাবে সহ্য করতে পারে যা লং রেঞ্জ শুটিংএর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়, ভালো ট্রিগার মেকানিজম রাইফেলের অ্যাকুরেসি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে আর ফ্রেমে পরিবর্তনের ফলে সৈন্যরা আরও ভালোভাবে রাইফেল ব্যবহার করতে সক্ষম হয়।
এইসকল কারণে এই আদ্দিকালের এম২৮-৩০ গুলো প্রায় ২ কিলোমিটার রেঞ্জের ভেতর থাকা যেকোন রক্তমাংসের টার্গেটকে অনায়াসে পরকালে পাঠিয়ে দিতে পারে। আর নতুন রাইফেল না বানিয়ে পুরাতন গুলো ব্যবহারে সুবিধা হয় এই যে, তারা আর সোভিয়েতরা যেহেতু একই রাইফেল ব্যবহার করছে তাই তারা সোভিয়েতদের কাছথেকে লুট করা গুলি দ্বারাই যুদ্ধ চালাতে সক্ষম হয়। ফিনিশদের সোভিয়েতদের মিলিটারি কোড সম্পর্কে ধারণা থাকায় ভূয়া মেসেজ পাঠিয়ে অনেক সময় তারা সোভিয়েতদের কাছ থেকেই সাপ্লাই এয়ার ড্রপ করাতো যাতে সেগুলো দ্বারাই আবার তারা সোভিয়েতদের মারতে পারে (মাছের তেলে মাছ ভাজা আরকি

যারা স্নাইপিং সম্পর্কে খোজ খবর রাখেন তারা সিমো হায়হা বা দ্যা গ্রেট হোয়াইট ডেথ সম্পর্কে জানেন না এমনটা সম্ভব নয়, সেই হোয়াইট ডেথ অনেকগুলো বন্দুক ব্যবহার করলেও বেশিরভাগ সময়ই কিন্তু এই এম২৮-৩০ ব্যবহার করতেন যা এর মান কতটা ভালো ছিল তার একটি অনন্য উদাহরণ। যাই হোক এই রাইফেলগুলোর মান ভালো হলেও রেড আর্মির বিশাল সৈন্য সম্ভার ও অস্ত্রশস্ত্রের সামনে ফিনিশরা টিকতে পারেনি কিন্তু তারা মূল নির্মাতার চেয়ে ভালো মানের অস্ত্র তৈরী করে পৃথিবীর সামনে এক অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করে গিয়েছে যে স্মার্টফোন প্রথম পশ্চিমা বিশ্বে তৈরী করা হলেও দূর প্রাচ্যে তৈরী স্মার্টফোনগুলোও কিন্তু খারাপ নয়.....


