মাত্র ১ মিটার উচ্চতায় SU-30LL যুদ্ধবিমান ফ্লাই! (ভিডিও)

  SU-30LL | pictue: internet

বেশিরভাগ লোকই এই ছবিকে বলবে ফেক!কিন্তু এটা সত্য যে রাশিয়ান ক্রেজি পাইলট ANATOLY KVOCHURS এই স্ট্যান্টটি বাস্তবে করে দেখিয়েছেন তার SU-30LL যুদ্ধবিমান দিয়ে!!!
কাজটি যেমন বড় কলিজা থাকতে হবে তেমনি থাকতে হবে দক্ষতা ও....এই রাশান লিজেন্ড এর সবই ছিল।
পাইলট Anatoly Kvochur ১৯৫২ সালের ১৬ এপ্রিল ইউক্রেনে জন্মগ্রহণ করেন।১৯৭৩ সালে তিনি V. M. Komarov Higher Military Flying School থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন।তারপর Group of Soviet Forces in Germany তে ২বছর সার্ভিস প্রদান করেন।সেখান থেকে তাকে Zhukovsky airfield এর টেস্ট পাইলট স্কুলে ট্রান্সফার করা হয়।এখান থেকে তিনি পুনরায় গ্রাজুয়েশন করেন।পরে ১৯৭৮-১৯৮১ পর্যন্ত তিনি Komsomolsk-on-Amur এসইউ-১৭ এর টেস্ট পাইলট হিসেবে কাজ করেন।টেস্ট পাইলট থাকা অবস্থায় তিনি Moscow Aviation Institute এর ভর্তি হন।এখান থেকে তিনি ১৯৮১ তে গ্রাজুয়েশন করেন।এখানে মনে রাখা উচিত, পাইলট দের একাধিক রকমের কোর্স করা লাগে।এর মাধ্যমে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আরো মজবুত হয়।পাশাপাশি প্র্যাকটিস এর ফলে একজন পাইলট হয়ে উঠেন দুর্ধর্ষ...💪
যাই হোক, তাকে পরবর্তীতে Mikoyan Design Bureau তে ট্রান্সফার করা হয়।মিগ সিরিজ এর সমস্ত যুদ্ধবিমান এখানেই তৈরি করা হয়।এখানে তিনি MiG-2, MiG-23 , MiG-27 , MiG-29 , MiG-31 সহ ৮০ এর অধিক মডেলের যুদ্ধবিমানের টেস্ট পাইলট ছিলেন!!!!
এছাড়া তিনি এয়ার-টু-এয়ার ও সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল টেস্ট ও অংশ নেন।এর মানে হচ্ছে তার বিমানের বিরুদ্ধে মিসাইল ফায়ার করা হবে(এক্সপ্লোসিভ ওয়ারহেড ছাড়া) এবং তিনি সেটা ফাঁকি দিয়ে চাইবেন।এর কারণ হলো সদ্য তৈরি ফাইটারটা মিসাইল এর বিরুদ্ধে কতটুকু একটিভ সেটা টেস্ট করা!!😱
এছাড়া তিনি বিভিন্ন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারশো তে রাশিয়ার হয়ে বিভিন্ন ধরনের এক্রোব্যাটিক স্ট্যান্ট দেখান।১৯৯৫ সালে তিনি এসইউ-২৭পিডি নিয়ে প্রথমবারের মতো "মিড এয়ার রিফুয়েলিং" করেন(মানে আকাশে ভেসে থাকা অবস্থায় ট্যাংকার এয়ারক্রাফট থেকে ফুয়েল নেয়া!

এই দুর্দান্ত, দুর্ধর্ষ পাইলট তার জীবনে এ ধরনের স্ট্যান্ট দেখাতে গিয়ে বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনায় পড়েন।মরতে মরতে ও বেঁচে গিয়েছিলেন অনেকবার ই।সোজা কথায় "রাখে আল্লাহ, মারে কে"
এই রকম একটা এক্সিডেন্টের কথা উল্লেখ করছি:
ঘটনা ঘটেছিল ১৯৮৯ সালের ৮জুন Paris Air Show তে।এই লিজেন্ডারি পাইলট তখন মিগ-২৯ চালাতেন।
Blue 303 ছিল ওই মিগ-২৯ এর কলসাইন।যাই হোক, low-speed,high-angle attack নামে একটা ম্যানুভার করতে গিয়ে তার মিগের এয়ার ইনটেক এ একটা পাখি আঘাত করে।ফলে তার ডানদিকের ইঞ্জিন ব্লাস্ট করে।এয়ারক্রাফট অক্ষত রাখতে তিনি ডানদিকের ইঞ্জিন সাথে সাথে অফ করে দেন।কিন্তু এক ইঞ্জিন পাওয়ার হারানোতে বিমান স্টল করতে শুরু করে
(স্টল=অভিকর্ষ এর প্রভাবে নীচে পড়ে যাওয়া)
তাই তিনি অপর ইঞ্জিনের ফুল আফটারবার্নার চালু করে দেন।

এর ফলে তার গতি খানিকটা বাড়ে(১৮০ কিঃমিঃ তে পৌঁছায়) একই সঙ্গে তার নিজের বিপদ ও বাড়ে।কারন অপর ইঞ্জিনে কিন্তু তখনো আগুন জ্বলছে।তিনি সেদিন খানিকটা গতি বাড়াতে পেরেছিলেন বলেই তার বিমান শো দেখতে আসা মানুষের ভিড়ে ক্রাশ করেনি।যদি করতো তাহলে যে বহু মানুষ আহত-নিহত হত তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।তিনি বিপদটা নিজের উপর দিয়ে নিয়েছিলেন।যার ফলে ইজেক্ট করা মাত্র ২.৫ সেকেন্ড পর বিমানটি পুরোপুরি বিস্ফোরিত হয়!!
এবং তিনি অগ্নিগোলক এর মাত্র ৩০মিটার দূরে প্যারাসুট নিয়ে ল্যান্ডিং করেন!!

উল্লেখ্য পাইলট Kvochur "Zvezda K-36D" ইজেকশন সিট ব্যবহার করেছিলেন।এই সিট জুলাই ২৪, ১৯৯৩ সালের Royal International Air Tattoo তে দুই মিগ-২৯এস এর পাইলট কে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।তারা মাঝ আকাশে পরস্পরের সাথে  ঠুয়া খাওয়ায় ইজেক্ট করতে বাধ্য হন।দুজন পাইলট এ সেফলি ল্যান্ডিং করতে পেরেছিলেন(এক পাইলট এর ঠ্যাং ভেঙেছিল😂😢)
এখনো যারা পাইলট Anatoly Kvochur এর এই রেকর্ড গড়া এক্সট্রিম লো-অলটিচুড ফ্লাইকে ফটোশপ এর কারসাজি ভাবছেন, তাদের বলবো এই ভিডিওটি দেখুন


Powered by Blogger.