করোনা ভাইরাস একটি জৈব অস্ত্র ?


ক্ষুদ্র এক ভাইরাসের সামনে কতটা অসহায় আজকের আধুনিক বিশ্ব। কতটা অসহায় মানুষের শক্তি। কতটা দুর্বল মানুষের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি।
সত্যিই দিন শেষে রাজাধিরাজ মহান আল্লাহ তাআলাই। তিনিই সকল কিছুর উপর সর্বশক্তিমান।পারমাণবিক বোমার হাত থেকে বাঁচতে আমরা বাঙ্কার বানিয়েছি।মিসাইলের হাত থেকে বাচতে আমরা স্যাম বানিয়েছি। কিন্তু জীবাণু বোমার হাত থেকে বাঁচতে নেওয়া সিস্টেম গুলো আসলেই দুর্বল।তা আমরা করোনা ভাইরাসের মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি।

পারমানবিক ওয়েপন ব্যাবহার করলে শত্রুরা সহজেই জেনে যেতে পারে। তবে জীবানু বা জৈব অস্ত্র দিয়ে শত্রু টার্গেট কৃত দেশের যেকোনো জায়গায় রেখে এলেই হবে। ফিরে আসতে আসতেই ছড়িয়ে পড়বে সবখানে। কিন্তু কে এর সঙ্গে যুক্ত তার কোনো প্রমাণ সহজেই পাওয়া যাবে না।পৃথিবীতে এখন প্রায় ১২০০ রকমের জৈব অস্ত্রে ব্যবহারযোগ্য জীবাণু আছে। জৈব অস্ত্র হতে হলে একটা অণুজীবের অবশ্যই উচ্চ সংক্রমণ করার ক্ষমতা, রোগ সৃষ্টির ক্ষমতা, ওই রোগের প্রতিষেধকের অপ্রতুলতা এবং সহজে পরিবহন করার ব্যবস্থা থাকতে হবে।

যুদ্ধক্ষেত্রে জীবাণু বোমা ব্যাবহার নতুন নয়।মধ্যযুগের যুদ্ধক্ষেত্রে সর্বপ্রথম জীবাণু অস্ত্রের প্রথম ব্যাবহার দেখা যায় ১৩৪৬ সালে।তৎকালীন তাতার বাহিনী যা চোঙ্গিস খান দ্বারা পরিচালিত হত, প্লেগ রোগে মৃত সৈন্যদের কাফা শহরে জীবানু অস্ত্র হিসাবে ব্যাবহার করা হয়েছিল। কুফা শহর যা বর্তমান ক্রিমিয়া নামে পরিচিত। এই শহরের মধ্যে সৈন্যদের ফেলে দিয়ে সব প্রবেশপথ বাইরে থেকে বন্ধ করে দিয়েছিল। ১৭৬৭ সালে সংঘটিত ফরাসি ও ভারতীয়দের মধ্যকার যুদ্ধে ফরাসি সৈন্যরা গুটিবসন্তের জীবাণুতে ভরা কম্বল তৎকালীন স্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করেছিল। যার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল সাধারণ জনগণের মাঝে গুটি বসন্ত ছড়িয়ে দেয়া।


সভ্যতা উন্নতি হয়েছে। সুতরাং জীবানু অস্ত্র ব্যাবহারের ধারণও পাল্টিয়েছে।একবিংশ শতাব্দীতে এসে আমরা নতুন ভাইরাসের সাথে পরিচিত হলাম যেমন সার্স, সোয়াইন ফ্লু, নিপাহ, এনকেফেলাইটিস, ইয়েলো ফিভার, ইবোলা ইত্যাদি। মধ্যযুগে কলেরা,বসন্ত এরকম জীবাণু গুলোকে ওয়েপন হিসাবে ব্যাবহার করা হত।
গুজববশত সমাজের বড় একটি অংশ মনে করছে, করোনাভাইরাস একটি জীবাণু অস্ত্র। অস্ত্রের কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য সাধারণের মধ্যে জীবাণু ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে যথাসময়ে প্রতিষেধকও ওষুধ কোম্পানিগুলো বাজারে ছাড়বে। এই পক্ষের যুক্তি হচ্ছে, বাদুড়, সাপ বা নানা ধরনের বন্য প্রাণী চীন, দক্ষিণ/পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার মানুষ শত শত বছর ধরেই ভক্ষণ করে। এটা তাদের খাদ্যাভ্যাসের অংশ। এত দিন করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। এখন কোত্থেকে উদয় হলো।


সারাবিশ্বে জীবাণু ছড়িয়ে দেওয়া এইবার প্রথম নয়।যেমন ১৯৮০ সালের দিকে কিউবাতে ডেঙ্গু জ্বরে মারা যায় ২ লাখের মত মানুষ।তখন ফিদেল কাস্ত্রো অভিযোগ করে বলেছিলেন , ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল যুক্তরাষ্ট্রের জীবাণু অস্ত্রের আক্রমণে।প্রকৃতপক্ষে পেন্টাগন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে অনুদান দিয়ে থাকে জীবাণু অস্ত্র নিয়ে গবেষণা করার জন্য।১৯৩০ সালে ততকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের পরিচালিত এক পরীক্ষার কারণে এরাল সাগরের একটি দ্বীপ চিরতরে মানুষ বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়ে যেখানে র্যাবিট ফিভার, প্লেগ, টাইফাস এবং ভেনিজুয়েলান ইকুইন এনসেফালাইটিস এর মতো একাধিক জীবাণু ছড়ানো হয়েছিল। এ ছাড়া ১৯৭১ সালে রাশিয়ায় অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য তৈরি গুটিবসন্তের জীবাণু দূর্ঘটনাক্রমে ছড়িয়ে পড়লে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোর পরীক্ষাগারে এ ধরনের জীবাণু মজুদ থাকার বিষয়টি আলোচনায় আসে।বর্তমান অনেক দেশের কাছে এরকম জীবাণু অস্ত্র রয়েছে। যেমন আমেরিকা, রাশিয়া,চীনা,উত্তর কোরিয়া, ফ্রান্স,বৃটেন, ভারত, আরো অনেক দেশের কাছে রয়েছে।
Powered by Blogger.