M202 ফ্লাশ রকেট
১৯৮৫ সালে নির্মিত আর্নল্ড শোয়ারজনেগার অভিনীত "কমান্ডো" মুভির একটি দৃশ্যে আপনারা M202 FLASH ৬৬ এমএম মাল্টিপল রকেট লঞ্চার ব্যবহার করতে দেখেছেন।
FLASH এর পূর্ণরূপ হলো FLame Assault SHoulder।এটি মূলত ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিখ্যাত মার্কিন ফ্লেমথ্রোয়ারের বিকল্প।অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি এসব ফ্লেমথ্রোয়ার দিয়ে আগুন প্রায় ৫০-৭০ ফিট দূর পর্যন্ত নিক্ষেপ করা যেত।এসব অস্ত্র শত্রু এলাকায় স্থাপনা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার কাজে ব্যবহার করা হত।আবার বাঙ্কার কিংবা আর্মার্ড টার্গেট(ট্যাংক,এপিসি) এর ক্রুদের জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার কাজেও ব্যবহার হত।
কিন্তু এই ফ্লেমথ্রোয়ার ছিল খুবই বিপদজনক অস্ত্র।একজন সোলজারকে পিঠে করে দাহ্য পদার্থভর্তি সিলিন্ডার বহন করতে হত যা ছিল যুদ্ধক্ষেত্রে খুবই বিপদজনক।কেননা সিলিন্ডারে গুলি লেগে তা বিস্ফোরিত হয়ে নিজের পক্ষের সোলজার মরার অনেক রেকর্ড আছে।তাই ফ্লেমথ্রোয়ারের মত দাহ্য,প্রচন্ড আগুন ও উত্তাপ সৃস্টিকারী এম২০২ এর যাত্রা শুরু হয়।
মূলত কনভেশনাল আরপিজি টাইপ এন্টি ট্যাংক ওয়েপন(গাইডেড/আনগাইডেড রকেট) তুলনামূলক দামি হওয়ায় এবং এধরনের অস্ত্রের বিস্ফোরণে ভাগ্যক্রমে শত্রু সৈনিকদের বেঁচে যাওয়া রোধ করতে পুরোনো অস্ত্রের নতুন ভার্শন ৭০ এর দশকে সার্ভিসে এনেছিল যুক্তরাষ্ট্র।তবে এটা দিয়ে রকেট প্রপেলড গ্রেনেড(আরপিজি) এর কাজ ও করা যেত।এম২০২ এ এম২৩৫ নামের ১.৩৪ পাউন্ডের thickened pyrophoric agent (TPA) ব্যবহার করা হয় যা অত্যন্ত দাহ্য পদার্থ যাতে আগুন লাগলে সহজে নিভবে না।এটি মূলত পাতলা triethylaluminum (TEA) এর সাথে polyisobutylene মিশ্রণ।এই দুটি যৌগ মিলিতভাবে ১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা সৃষ্টি করতে পারে যা ফ্লেমথ্রোয়ার থেকে অনেক বেশি।যৌগ দুটোর মিশ্রণ পানির নিচেও আগুন জ্বালাতে সক্ষম।মানে এর আগুন আপনি পানি দিয়ে নিভাতে পারবেন না বরং যতক্ষণ ঐ রাসায়নিক শেষ না হবে ততক্ষণ আগুন জ্বলবে।এধরনের আগুন নিভাতে ফায়ার সার্ভিস ফোম ব্যবহার করে।
এর ম্যাক্সিমাম ফায়ারিং রেঞ্জ ৭৫০ মিটার।তবে ইফেক্টিভ রেঞ্জ হলো ৫০০ মিটার যেখানে হিট করার চান্স ৫০% এর বেশি থাকে।
বাংকারের(ভিশন স্লিট) জন্য ৫০ মিটার,স্কোয়াড সাইজ টার্গেটে ২০০মিটার এবং দরজার মত পয়েন্ট টার্গেটে ১২৫ মিটার ইফেক্টিভ রেঞ্জ।এক একটা রকেটের ব্লাসটিং রেডিয়াস ২০ মিটার।মানে এই রেঞ্জ থেকে ফায়ার করলে আপনার কঙ্কাল ছাড়া আর কিছু থাকবেনা।তবে ঐ দাহ্য এম২৩৫ ওয়ারহেড আর্মড না করেও এটি নরমাল রকেটের মত ফায়ার করা যায়।তারপরও ৫০ ফুট দূর থেকে ফায়ার করাটা ডেঞ্জার জোনের মধ্যেই পড়বে।ফায়ারিং মুডটাও চমৎকার।প্রত্যেকবার একটা করে রকেট ফায়ার করতে হয় তবে একে সেমি-অটোমেটিক বলা যাবে না।আরেকটা মুডে একসাথেই ৪টা রকেট ফায়ার করতে হয়।রেস ৩ মুভি এর সাল্লু ভাইয়ের মত একসাথে ২টা রকেট(তাও আবার ট্যাব দিয়ে টার্গেট লক করে!) ফায়ার করতে পারবেন না😂
আর এগুলো অপ্টিক্যাল গাইডেড এবং ফায়ার এন্ড ফরগেট রকেট।মানে আপনি ফায়ার এর পর এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না এবং এগুলো অলটাইম টার্গেটের দিকে সোজা ছুটে যাবে।আপনি কোনোরকমে ফায়ার করবেন আর এটি নিজে নিজে টার্গেট খুঁজে নিবে এমনটা নয় 😆🔫