হাইড্রোজেন বোমা নিয়ে আলোচনা।

হাইড্রোজেন বোমা
আজকে আমি হাইড্রোজেন বোমা নিয়ে আলোচনা করব।হাইড্রোজেন বোমা মূলত ২য় প্রজন্মের পারমাণবিক বোমাকে বলা হয়।হিরোসিমা আমলের পারমাণবিক বোমা গুলো কে প্রথম প্রজন্মের পারমাণবিক বোমা বলা হয়। হাইড্রোজেন বোমার বিস্ফোরণে নিমেষে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে কয়েকটি বড় শহর।তাছাড়া রেডিয়েশন 'ত আছেই। এর চেয়ে শক্তিশালী বোমা বিশ্বে আর দ্বিতীয়টি নেই। অবশ্য ধ্বংস ক্ষমতা নির্ভর করে মেগাটনের ওপর।হাইড্রোজেন বোমা মূলত কিলোটন আকারের হয় না।১৯৫২ সালে বিশ্বের প্রথম হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটায় যুক্তরাষ্ট্র। যার বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ১ কোটি টন ট্রাইনাইট্রো টলুইনের (টিএনটি) সমান। এখন হাইড্রোজেন বোমার ক্ষমতা বোঝার জন্য আমরা জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত পারমাণবিক বোমা যথাক্রমে ‘লিটল বয়’ ও ‘ফ্যাটম্যান’-এর শক্তির উল্লেখ করতে পারি। লিটল বয়ের বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ১৫ হাজার টন টিএনটির সমান। আর ফ্যাটম্যানের বিধ্বংসী ক্ষমতা ছিল ২০ হাজার টন টিএনটির সমান।এখন আসি ধব্বংস ক্ষমতা সম্পর্কে।আমি যদি এখন বলি ১কোটি টন টিএনটি 'তে ১০০ টি হিরোসিমার মত শহর ধব্বংস হয়ে যাবে?। আসলে তা নয়।পারমাণবিক বোমার ধব্বংস ক্ষমতা নির্ভর করে আবহাওয়া,। রেডিয়েশন অনেক জিনিসের ওপর নির্ভর করে, বায়ুর চাপ, তাপমাত্রা, ঘনত্ব, ভৌগলিক পরিবেশ ইত্যাদি...সেজন্য এলাকাভেদে ভিন্ন হবে।

হাইড্রোজেন বোমা

হাইড্রোজেন বোমা তৈরি করা খুবই জটিল বিষয়। তবে মোটা দাগে বলতে গেলে এই বোমা তৈরির মূল ভিত্তি পরমাণুর ফিউশন প্রক্রিয়া। ফিউশন হলো- দুটি পরমাণু একীভূত হয়ে অপেক্ষাকৃত বেশি শক্তি সঞ্চয়করা। তবে হাইড্রোজেন বোমা তৈরির বর্তমান ধারণায়ফিউশন ও ফিশন দুই প্রক্রিয়াই কাজে লাগানো হয়। ফিশন হলো- একটি অনু থেকে দুই বা ততোধিক ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় পারমাণবিক বোমা তৈরি করা হয়। আর ফিউশন ও ফিশন প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে যে বোমা তৈরি করা হয়, তাকে বলা হয় থার্মোনিউক্লিয়ার বোমা বা হাইড্রোজেন বোমা।

হাইড্রোজেন বোমা
 আমি যদি জার বোম্বার বা টিসার বোমের কথা বলিবা টিসার বোম।এটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় থার্মো নিউক্লিয়ার বোম্ব। জার বোম্বা ছিল ২৭ মেট্রিক টন ওজনের আর ৮মিটার দীর্ঘ।২.১ মিটার উঁচু।মানে একটা হাতির সমান।এটি ছিল ৫৬ মেগাটন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি হাইড্রোজেন বোমা।এটি ছিল তিন স্তরের একটি হাইড্রোজেন বোমা।এরকম মোট তিনটি বোমা তৈরি করা হয়েছিল।একটি পরিক্ষার জন্য, একটি তাদের অস্ত্র ভান্ডারে রয়েছে এবং বাকিটি খেলনা বোমা।এটার ব্লাস্ট রেডিয়াস বা ব্লাস্ট ইয়েল্ড সম্পর্কেও বিভিন্ন মতামত রয়েছে তাই সঠিক কোনটা সেটা ঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়আর লেটেস্ট হিসাব অনুযায়ী এটির দ্বারা সৃষ্ট মাশরুম ক্লাউডের উচ্চতা ছিল ৯৬ কিলোমিটার। আর আম্রিকানদের দাবি অনুযায়ী তাদের একটা স্পাই প্লেন ঐ এলাকায় ছিল এবং ২৫০+ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায়ও সেটির বাইরের অংশ ঝলসে গিয়েছিল।বিস্ফোরনের পর এটার অগ্নি গোলকের ব্যাসার্ধ ছিল ৯৫ কিলোমিটার।এই বোমা ফাটলে ১০০ কিলোমিটার দূরের লোকের শরীর থার্ড ডিগ্রী বার্ন হবে।

হাইড্রোজেন বোমা
যদি এই বোমা কোন শহরে নিক্ষেপ করলে ৩০০ কিঃমিঃ ব্যাসার্ধের এলাকা বসবাসের অনুপযোগী হবে রেডিয়েশন সহ।তাছাড়া আরো অনেক বিপুল ব্যাসার্ধের এলাকা পূর্ন রেডিয়েশনে আক্রান্ত হবে।এটা যদি ২০,০০০ ফুটে এয়ার বাস্ট মোডে নিউ ইয়র্ক সিটিতে নিক্ষেপ করে,তাহলে নিউ ইয়ার্ক সিটি স্রেফ ইট পাথরের জঙ্গল হয়ে যাবে।

Powered by Blogger.