★বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ভবিষ্যৎ, কিছু জিজ্ঞাসা এবং তার উত্তর★


আপনারা সকলেই জানেন ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য ৮ টি মাল্টিরোল কমবেট এয়ারক্রাফট (MRCA) কেনা হবে।অনেকের মনে প্রশ্ন কোন মডেলের বিমান কেনা হবে??আসুন আমরা বিশ্লেষণ করি-
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী ১৯৯৮ সালে রাশিয়া থেকে ১৬ টি মিগ-২৯ ফাইটার এয়ারক্রাফট অর্ডার করেছিলো। ১৯৯৯ সালের মধ্যেই ৮ টি বিমান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর বহরে যুক্ত হয়।কিন্তু সেইসময় সরকার পরিবর্তনের ফলে বাকি ৮ টি মিগ-২৯ দেশে আসার আগেই চুক্তি বাতিল করে দেয়া হয়।ফলে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে যে ৮ টি ফাইটার কেনা হবে তা মিগ-২৯ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ১০০%।কারন আমাদের মিগ-২৯ এর স্কোয়াড্রন অর্ধপূর্ণ। এক এক স্কোয়াড্রনে সাধারণত ১৬-২১ টি বিমান থাকে।আমাদের দেশে ১৬ টি বিমান নিয়ে একটি স্কোয়াড্রন গঠিত হয়।সেই হিসেবে ৮ টি মিগ-২৯ কিনে স্কোয়াড্রন পুর্ন করা হবে। আর মিগ-২৯ এর সর্বাধুনিক ভার্সন মিগ-২৯ এম২ কেনা হবে বলে শোনা যাচ্ছে।
Sukhoi SU-30 কেনা হবে কিনা-
বাংলাদেশ সরকার বিমানবাহিনীতে একটি "মেরিটাইম স্ট্রাইক" স্কোয়াড্রন খোলার পরিকল্পনা করেছিলো অনেক আগেই।সেই হিসেবে প্রথম পছন্দের তালিকায় আছে সু-৩০ যুদ্ধবিমান। এই বিমান দিয়ে সমুদ্রসীমার মধ্যে আগত যেকোন হুমকিকে মোকাবেলা করা হবে।ধারনা করা হচ্ছে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১ স্কোয়াড্রন সু-৩০ কেনা হবে।
আমাদের কোন ডেডিকেটেড এট্যাক হেলিকপ্টার নেই-
আমাদের দেশের কোন সরকারই এট্যাক হেলিকপ্টারের প্রতি আগ্রহ দেখাননি।আমাদের বর্তমানে এট্যাক হেলিকপ্টার বলতে রাশিয়ান Mi-171sh আছে।এই হেলিকপ্টার সৈন্য, অস্ত্র,রসদ পরিবহনের পাশাপাশি আক্রমণ চালাতে সক্ষম। তবে আশার কথা হলো ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সেনাবাহিনীর জন্য ডেডিকেটেড এট্যাক হেলিকপ্টার কেনার পরিকল্পনা আছে।যার লিস্টে আছে Mi-35, Z-10, T-129। তবে রাশিয়ান Mi-35 কেনার সম্ভাবনা বেশি।
আমাদের এয়ারডিফেন্স অনেক দূর্বল
আমাদের এয়ারডিফেন্স সত্যিইই অনেক দূর্বল। আমাদের স্যাম সিস্টেম বলতে আছে স্বল্প পাল্লার FM-90. তবে চীন থেকে মধ্যম পাল্লার LY-80E কেনা হয়েছে। দুরপাল্লার ক্ষেপনাস্ত্র হিসেবে চীনের HQ-9 এবং রাশিয়ান S-300 /S-350 বিবেচনাধীন আছে।এছাড়া আমাদের নিজস্ব মিসাইল তৈরির কাজ চলমান আছে।
আমরা কবে নিজেরা বিমান বানাবো-
বঙ্গবন্ধু এরোনটিকাল সেন্টার ২০২১ সালে হালকা প্রশিক্ষন বিমানের প্রোটোটাইপ আকাশে উড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২১ সালেই আমরা নিজেদের তৈরি বিমান দেখতে পারবো।এ কাজে আমাদেরকে রাশিয়ান ও চাইনিজ বিভিন্ন এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি প্রয়োজনীয় সাহায্য সহযোগীতা করছে।
আমাদের কোন UAV system নেই-
কথাটা ভুল।আমাদের UAV system আছে।কিন্তু তা স্বল্প পাল্লার।২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিমানবাহিনীর জন্য এক ইউনিট UAV আসছে যা আক্রমণ কাজেও ব্যবহার করা যাবে।আমাদের বঙ্গবন্ধু এরোনটিকাল সেন্টার "BAC Buzz" নামের surveillance UAV নির্মান করেছে যা সেনাবাহিনী ব্যবহার করে।এছাড়া আমরা নিজেরাই এট্যাক UAV নির্মান করছি। এর জন্য বঙ্গবন্ধু এরোনটিকাল সেন্টারে একটি UAV Complex চালু করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে ২০১৮ তেই আমাদের নিজেদের বানানো UCAV আকাশে উড়বে।
বাংলাদেশ কি JF-17 কিনবে?-
বাংলাদেশ বিমানবাহিনী পুরাতন F-7MB ফ্লিট রিপ্লেস করবে ২০১৮ সালে।সেই হিসেবে JF-17 এর চাইনিজ ভার্সন FC-1 কেনা হবে তা অনেকটা নিশ্চিত। এর অস্ত্রধারণ ক্ষমতা অনেক ভালো এবং বিভিআর ক্যাপাবিলিটি আছে।যদিও গতি কম তাও ভালোই কাজ করবে।তাছাড়া এই বিমান CM-400 নামক হাইপারসনিক এন্টিশিপ মিসাইল বহন করতে সক্ষম। তাই এটি নৌবাহিনীকেও সাহায্য করতে পারবে।
বিমানবাহিনী ৪.৫ জেনারেশন ফাইটার হিসেবে কোন বিমান কিনবে-
৪.৫ জেনারেশন ফাইটার হিসেবে বিমানবাহিনীর পছন্দের তালিকায় আছে SU-30, SU-35, MiG-35.তবে সু-৩০ কেনা হবে এটা শিউর। মিগ-৩৫ কেনার সম্ভাবনা অনেক। তবে কিনলে ২০২১-২২ অর্থবছরে কিনবে।
Powered by Blogger.