ইরান কি হতে চলেছে মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার সবচাইতে বড় বন্ধু রাষ্ট্র নাকি বৃহৎ অস্ত্রক্রেতা...!



আগে একটা নিউজ দিয়ে নেই- রাশিয়ান আর্মড ফোর্স ও স্পুতনিক সুত্র থেকে জানা গেছে যে ইরান এস-৩০০ হাতে পাওয়ার পর এবার রাশিয়ান অত্যাধুনিক মেইন ব্যাটেল ট্যাংক T-90 ক্রয়ের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং অজানা সংখ্যক পরিমানে এই ট্যাংক ক্রয়ে তারা আগ্রহী। কিছুদিন আগে ইরানের পলিটিকাল সাইন্টিস্ট ও মিলিটারি এক্সপার্ট ' Abouzar Bagheri' স্পুতনিক কে এমনটা জানান। ইরানীয় সেনাবাহিনীরর গ্রাউন্ড ফোর্স কমান্ডার Ahmad Reza Pourdastan বলেন যে তেহরান মিলিটারি কর্পোরেশন মস্কোর সাথে খুব নমনীয় সম্পর্ক স্থাপন করছে এবং তারা তাদের সামরিক শক্তির আধুনিকায়ন এ মস্কো থেকে বিভিন্ন ডিফেন্স ইকুইপমেন্ট ক্রয়ে আগ্রহী আর ইরান এর উপড় থেকে সমস্ত অস্ত্র নিশেধাজ্ঞা উঠে গেলেই এই সম্পর্ক আরো বেশি জোরালো হবে।
.
আমরা সকলেই জানি যে ইতিমধ্যে ইরান রাশিয়া থেকে এস-৩০০ এর ডেলিভারি পাওয়া শুরু করেছে কিছুদিন হলো, এছাড়াও রাশিয়ার কাছ থেকে বিপুল পরিমানে সামরিক পরিবহন বিমান ও এয়ার রিফিউলিং বিমান ক্রয়ের কথা বার্তা পাকা করেছে। এছাড়াও রাশিয়ান মাল্টিরোল এয়ার সুপেরিওর ফাইটার Sukhoi SU-30 বিশাল পরিমানে ক্রয়ের কথাবার্তা চলতিছে, এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে জানা গেছে যে তারা খুব সম্ভবত ইরানে সু-৩০ এর প্রডাকশন প্ল্যান্ট অথবা এসেম্বলিং প্ল্যান্ট খুলবে কারন এক বিশাল পরিমান ফাইটার ক্রয়ে আগ্রহী ইরান,, সে ক্ষেত্রে ইরান সু-৩০ এর নিজেস্য ভার্সন ও পেতে পাড়ে। এছাড়া ও চীন তাদের J-10 অফার করেছে ইরান কে (তেলে খনির ইজারার বিনিময়ে ফাইটার)। এছাড়াও শোনা যায় যে ২০২২/২৪ সাল নাগাদ ইরান রাশিয়ান স্টিলথ ফাইটার SU-50 PAK FA এর এক্সপোর্ট ভেরিয়েন্ট ক্রয়ে আগ্রহী এমনকি রাশিয়াও বিক্রয়ে আগ্রহী তাদের ইউনিট কষ্ট কমাতে এবং জোরালো বন্ধুত্ব এর কারনে। এছাড়াও রাশিয়া থেকে ইরান বিভিন্ন ধরনের সামরিক ইকুইপমেন্ট সিস্টেমস ক্রয় করবে এমনটা মোটামুটি সুস্পষ্ট কারন দুই দেশ এর সার্থ এক ও অভিন্ন।
.
ইরান এর উপড়ে অনেক দিন অবরোধ থাকায় ইরান অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র থেকে বঞ্চিত আর এই অভাব দূর করতে তাদের রাশিয়া ও চীন ছাড়া গতি নাই আর অপরদিকে রাশিয়ান ফেডারেশন এর মধ্যপ্রাচ্যে একটা শক্তিশালী বন্ধু রাষ্ট্র ও বৃহৎ অস্ত্র বাজার দরকার তাদের প্রভাব বিস্তারে ও অর্থনীতি কে আবার ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে সাথে পশ্চিমা তথা আমেরিকান প্রভাব বিস্তার রোধ করতে। এ ক্ষেত্রে দুই দেশ এর লক্ষ এক এবং সাথেই বন্ধু ও শত্রু একই আর মূলত সেই কারনেই দিন দিন মস্কো-তেহরান সম্পর্ক আরো জোরদার হচ্ছে।
.
মূলত আইএস কে মোকাবেলা করার মধ্য দিয়ে রাশিয়া কোল্ডওয়ার এর সময় থেকে এই পর্যন্ত সময়ে তৈরি করা সব অত্যাধুনিক ওয়েপন্স বা ইকুইপমেন্ট প্রদর্শন করেছে এবং এর মধ্য দিয়ে তারা তাদের হারিয়ে যাওয়া অত্যাধুনিক অস্ত্র নির্মানের গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে। যেখানে পশ্চিমা সমাজ ভাবতো যে রাশিয়া অত্যাধুনিক ওয়েপন্স ডেভেলপার এ যথেষ্ট ভালো মান দিতে পারেনা আজ সেই পশ্চিমারাই তাদের ওয়েপন্স ও ইকুইপমেন্ট এর ব্যবহারে বলতে বাধ্য হয়েছে যে আমেরিকান ওয়েপন্স ও টেকনোলজির চাইতে কোন অংশে রাশিয়া কম না এমনকি যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ান ওয়েপন্স আমেরিকান ওয়েপন্স থেকেও বেশি কার্জকারী। আর করভেট ওয়ারশীপ ও কিলো ক্লাস এর মত যুদ্ধাস্ত্র থেকে নিখুঁত ভাবে লক্ষবস্তুতে ক্রুস মিসাইল হামলা চালাইয়ে রাশিয়া আমেরিকা ও এর মিত্রদের মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছে। একদিকে রাশিয়া যেমন তার মিত্র রাষ্ট্রকে সাহায্য করছে ঠিক অপরদিকে তাদের সমস্ত ওয়েপন্স বিশ্ববাজার এ উপস্থাপন করছে এর ফলে তারা তাদের অস্ত্র ব্যবসা কে কাজে লাগিয়ে নিজেদের অর্থনীতি চাংগা করছে,, রাশিয়া এরি মধ্যে তাদের সমরাস্ত্র এর বিপুল ক্রেতা পেয়েছে।
.
★★★ অর্থাৎ একদিকে যেমন রাশিয়া ইরান-সিরিয়া এর সহায়তায় মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের অবস্থান শক্ত করছে এবং তাদের অস্ত্রবানিজ্য এর প্রসার ঘটাচ্ছে ঠিক অপরদিকে ইরান রাশিয়ার সহায়তায় আধুনিক অস্ত্রে নিজেদের সাজানোর সুযোগ পাচ্ছে আর সিরিয়া তার দেশের শাসনব্যবস্থা ধরে রেখে রাশিয়াকে কাভার হিসেবে নিয়ে বিদ্রোহ ও আইএস দমনে সাফল্য পাচ্ছে। তাই বোঝাই যাচ্ছে রাশিয়া যেমন ইরান- সিরিয়া কে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বিস্তার করচ্ছে সাথেই ইরান ও রাশিয়ার সহায়তা বা সাপোর্ট এ মধ্যপ্রাচ্যে এক শক্তিধর দেশে পরিণত হবার পথে হাটতে শুরু করেছে। সার্থ্য সবার ই আছে আর এই ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন সার্থ্য থাকলেও ফলাফলে সবার ই লাভ হবে হয়তো কম আর বেশি।

-আধুনিক সমরাস্ত্র অবলম্বনে সোহেল আদনান।
Powered by Blogger.