বাংলাদেশ সেনা বাহিনির পদাতিক ফোর্স।
বাংলাদেশ সেনা বাহিনির পদাতিক ফোর্স। |
কমপক্ষে ৩ কোম্পানি সৈন্যের প্রয়োজন পড়ে। তাদের লজিস্টিক ও ফায়ার সহায়তা প্রদানের জন্য আরও সৈন্য প্রয়োজন পড়ে। সুতরাং আক্রমণ পরিচালনা করতে হবে জয়ের জন্য। না হয়
আক্রমণ রচনা না করাই শ্রেয়। মাও সে তুং এর ভাষায় ‘We do not Strike rashly, But When we do Strike, We must win।’ যুদ্ধের দুইটি বৃহত্তম রণকৌশল
হলো প্রতিরক্ষা ও আক্রমণ। সামরিক পরিভাষায় যাকে বলা হয় ‘offense is the best defense’ কিন্তু এসবের পরেও রণকৌশল
মেন্যুভারে প্রতিরক্ষা একটি বৃহত্তম
অপারেশন। কোনো একটি ফোর্স কাঠামো প্রস্তুতের ক্ষেত্রে অবশ্যই সম্ভাব্য শত্রুদের শক্তি ও রণকৌশলকে ভিত্তি করে রচনা করতে হয়। আমাদের সম্ভাব্য
শক্রদের সৈন্যসংখ্যা ১০ লক্ষের মতো। তাদের আছে সর্বমোট ৩৭টি ডিভিশন। সাধারণত ৩টি ডিভিশন মিলে একটি কোর হয় এবং একইভাবে সাধারণত ৩টি
কোর মিলে একটি আর্মি কমান্ড হয়। এটা হল মৌলিক ফোর্স কাঠামো। আমাদের
সম্ভাব্য শক্রদের প্রায় ৬টি আর্মি কমান্ড রয়েছে। এগুলোর নাম সম্ভবত
১. কেন্দ্রীয় কমান্ড
২. ইস্টার্ন কমান্ড
৩. নর্দার্ন কমান্ড
৪. সাউদার্ন কমান্ড
৫. সাউথ ওয়েস্টার্ন কমান্ড এবং
৬. ওয়েস্টার্ন কমান্ড।
লক্ষ্য করুন এসব আর্মি কমান্ডের
সব কটিই আমাদের দিকে মুখ করে নেই। প্রত্যেকটি কমান্ডই কোনো না কোনো সম্ভাব্য শক্রর বিপরীতে মোতায়েন আছে। সুতরাং যুদ্ধ লাগলে পুরো আর্মিই
আমাদের আক্রমণ করবে আর আমরা আক্রমণের জোয়ারে ভেসে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে পড়ে যাব; তা ধারণা করার কোনো উপায় নেই। উদাহরণস্বরূপ বলা
যেতে পারে এই ৬টি কমান্ডের মধ্যে
শুধুমাত্র ইস্টার্ন কমান্ড আমাদের
বিপরীতে আছে। কী আছে এই ইস্টার্ন কমান্ডে? ইস্টার্ন কমান্ডে রয়েছে ৩টি কোর। প্রতিটি কোরে রয়েছে ৩টি করে ডিভিশনআর একটি কোর স্ট্রাইকিং ডিভিশন। সে
হিসেবে ইস্টার্ন কমান্ডে রয়েছে ১০টি ডিভিশন। তাদের প্রতিটি ডিভিশনে ১৫ হাজারের মতো কমান্ড সৈন্য এবং ৮ হাজারের মতো সহায়ক সৈন্য রয়েছে।
Combat Doctrine বলে একটি কথা আছে।
আমাদের সম্ভাব্য শক্রদের Combat Doctrine
অনুযায়ী এই ডিভিশনগুলোকে Holding Formation
এবং Striking Formation হিসেবে ভাগ করা হয়েছে। ফলে এই ১০ ডিভিশন সৈন্য একসঙ্গে আক্রমণ করতে পারবে না। তাই
আক্রমণ রচনাকারী সৈন্যসংখ্যা হবে মোটামুটি ৫ ডিভিশনের মতো।
এই হলো সম্ভাব্য শক্রদের সৈন্যসংখ্যা এবং রণকৌশল। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে বর্তমানে ৮টি পদাতিক ডিভিশন রয়েছে। তাছাড়াও রয়েছে সশস্ত্র পদাতিক ব্রিগেড ও অন্যান্য সহায়ক বাহিনী। সব মিলে বাংলাদেশের সৈন্য সংখ্যা প্রায় তিন লক্ষ পঞ্চাশ হাজার। প্রতিটি ডিভিশনেরই আলাদা আলাদা দায়িত্বপূর্ণ এলাকা রয়েছে। এই ৮টি ডিভিশনের সঙ্গে যুদ্ধকালীন সময়ে সহায়ক বাহিনী
হিসেবে আরও রয়েছে বিজিবি ও
বাংলাদেশ আনসার। যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় প্রতিরক্ষায় বাংলাদেশ আনসার
সেনাবাহিনীর সাথে কাঁধে কাঁধ
মিলিয়ে যুদ্ধ করবে। বর্তমানে
বাংলাদেশে ৩৬টি পুরুষ ও ২টি মহিলা আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে। এ সমস্ত আনসার ব্যাটালিয়ন সেনাবাহিনীর সঙ্গে
পার্বত্য চট্টগ্রামে Counter Insurgency
Operation (CIO) তে কর্মরত।
এমনকি তারা বাংলাদেশে দক্ষিণ-
পশ্চিম অঞ্চলে Counter terrorism রক্ষায়ও
কর্মরত। বর্তমানে আনসার বাহিনীকে নিয়মিত বাহিনীর আদলে সংগঠিত করা
হয়েছে। আশা করি বাংলাদেশ
সশস্ত্রবাহিনী ও আনসার বাহিনী ও
সর্বোপরি ১৬ কোটি জনগণের সহায়তায় আর যাই হোক, আক্রমণের জোয়ারে বঙ্গোপসাগরে ভেসে যাব না এ আশ্বাস
দিতে পারি।