|
ইসরায়েলি মারকাভা ট্যাংক |
মারকাভা ইজরাইলের বানানো বিশ্বের আধুনিক ট্যাংক গুলোর ভিতরে একটি ।
অন্যান্য দেশ গুলোর ট্যাংকের ইঞ্জিন থাকে পেছনের দিকে আর এই ট্যাংকের
সামনের দিকে ফ্রন্ট মাউন্টেড ইঞ্জিন বসানো আছে । আর ঠিক এই কারনেই এই
ট্যাংক ক্রুদের সেফটি বাড়ছে বহুগুনে । সকল Merkava সিরিজের ট্যাংক গুলো
যুদ্ধাবস্থায় মালামাল ও সৈন্য পরিবহনে সক্ষম । অন্য দেশের ট্যাংক গুলোতে
যেখানে ৩-৪ ক্রু এর বেশি বসার কোন ব্যবস্থাই নাই সেখানে এই ট্যাংকে
অ্যামুনিশন আনলোড অবস্থায় ১০ জন পর্যন্ত সৈন্য বহন করা যায় ।
|
মারকাভা ট্যাংকের ওয়েপন্স |
Main Gun হিসেবে 120mm smoothbore ছাড়াও ১টি ATGW (Anti Tank Guided
Missiles Weapons) ও ২ টি Machine Gun আছে ।১৯৭৩ সালের যুদ্ধে ইজরাইল অনেক
বড় ধাক্কা খেয়েছিল সিরিয়ার এনটি ট্যাংক ওয়েপন এর কাছে এর পরিপ্রেক্ষিতে
তারা মারকাভা ডিজাইন করে । প্রথম সার্ভিসে আসার পর অনেক চমক দেখিয়েছিল এই
মারভাকাভা । ১৯৮৬ সালের যুদ্ধে লেবাননের চারটি ট্যাংক কে একাই একটা মারকাভা
ধংস করতে পেরেছিল । এই ট্যাংক কে তারা বলত Gods Chariot।
|
ইজরাইলের মারকাভা ট্যাংক ধ্বংশ |
অনেকের কাছেই ধারণা ছিল এই দানব কে ধংস করা পসিবল না । কিন্তু আসলেই কি তাই
? চলুন এবার যেনে নেই কিভাবে এই ইজরাইলের অহংকার পতন হয়েছিল ।
মারকাভার সর্ব প্রথম ধাক্কা খেয়েছিল ফিলিস্তিনের একটি প্যারামিলিটারি গ্রুপ
সালেহিদিন ব্রিগেডের কাছে । ২০০২ সালে ইজরাইল নতুন বসতি স্থাপনের
সিদ্ধান্ত নেয় । এই সুযোগেই সালেহিদিন ব্রিগেডের কয়েকজন সৈনিক ৮০ কিলো
ওজনের মাইন ফিট করে রাখে । মারকাভা আসার পরেই টা ডিটোনেট করা হয় । ঠিক তখনই
বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ট্যাংক মারকাভার অহংকার ভেঙ্গে যায় । এর কয়েকদিন
পরেই ফিলিস্তিন এর আরেক মিলিটারি গ্রুপ আল কুদুস ব্রিগেড এর আরপিজির আঘাতে
একটি মারকাভা খণ্ড খণ্ড হয়ে যায় । তারা ট্যাংকের ব্যাক ডোরে আরপিজি চার্জ
করেছিল । প্রথম রকেট গিয়ে ট্যাংকের দরজা ভেঙ্গে ফেলে, দ্বিতীয় রকেট গিয়ে
সোজা পরে ট্যাংকের ভিতরে রাখা ৪০ টি গোলার উপর এর পরে কি হয়েছিল আশা করি
বুঝতেই পেরেছেন ।
|
মারকাভা ট্যাংকের ক্রু। |
কিন্তু মারকাভা সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় ২০০৬ সালের লেবাননের হিজবুল্লার সাথে
যুদ্ধে । ইজরাইল ১৯৮২ সালের অনুরূপে লেবাননের সাউথ গিরিখাত দিয়ে ট্যাংক
প্রবেশ করানোর সিদ্ধান্ত নেয় । হিজবুল্লাহর কমান্ডোরা ছিলেন অনেক দুঃসাহসী
তারা আগে থেকেই ফিলিস্তিনিদের কাছ থেকে মারকাভা ধংসের পদ্ধতি যেনে
নিয়েছিলেন । গিরিখাতের সেই যুদ্ধে মাত্র ১৭ থেকে ২০ মিনিটের মাথায় ১০ থেকে
১২ টির মত মারকাভা ধংস হয়ে যায় রাশিয়ান গ্রাদ মিসাইলের আঘাতে । দিশে হারা
হয়ে ইজরাইল ওয়াহদিল আহজাদ নামক আরেক পাহাড়ি রাস্তা দিয়ে মারকাভা কে প্রবেশ
করায় । এখানেও হিজবুল্লাহর সৈনিক রা ওত পেতে বসে ছিলেন । তারা এখানে
প্রবেশের কয়েক মুহূর্ত পরেই আইডিএফ ব্যাটেলিয়ন এর সামনের এবং পিছন দিক দিয়ে
হিজবুল্লাহ আর্মিরা অ্যামবুশ করে । ফাঁদে পরা ইঁদুরের মত অবস্থা হয়
ইজ্রাইলি আর্মির । ৩৩ দিনের এই যুদ্ধে শোচনীয় ভাবে ইজরাইলের পরাজয় হয় ।
হিজবুল্লাহ যোদ্ধা ছিল মাত্র ৭ হেকে ৮ হাজার এবং ইজ্রাইল তাদের প্রায় ৫০
হাজারের উপরেও সৈনিক নামিয়েছিল এই যুদ্ধে । এবং এই সাথে ছিল আধুনিক
যুদ্ধাস্ত্র ।
|
ধংশপ্রাপ্ত ইজরায়েলি মারকাভা ট্যাংক |
এই যুদ্ধে ইজরাইলের ৫ ভাগের পুরো ১ ভাগ ট্যাংক কিংবা তার চেয়েও বেশি খতম
হয়ে যায় । ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রায় ২০০র মত মারকাভা । আর বর্তমান সময়ে
ফিলিস্তিনের আল কাসাম ব্রিগেডের যোদ্ধাদের কাছে এই জিনিস ধংস করা কোন
ব্যাপার নয় । ২০১৪ সালের সাপ্তাহ খানেক এর যুদ্ধে ইজরাইল ১০ থেকে ১২ টির
মত মারকাভা হারিয়েছিল ।