উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিনের হাস্যকর ভিক্টোরিয়া ক্রস!

উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিন, স্বৈরশাসক
উগান্ডার স্বৈরশাসক ইদি আমিন ১৯৪৬ সালে বৃটিশ কলোনিয়াল সেনাবাহিনী 'কিংস আফ্রিকান আর্মি'তে যোগ দিয়েছিলেন বাবুর্চি হিসেবে। ধীরে ধীরে পদোন্নতি পেয়ে তিনি ১৯৫৯ সাল নাগাদ 'আফেন্দি' (ওয়ারেন্ট অফিসার) হয়েছিলেন। এটাই ছিল কালো মানুষ হিসেবে কিংস আফ্রিকান আর্মির সর্বোচ্চ পদ। ১৯৬১ সালে তিনি উগান্ডার সেনাবাহিনীতে লেফটেন্যান্ট পদে কমিশনড অফিসার হন; ১৯৬২ সালে ক্যাপ্টেন, আর ১৯৬৩ সালে মেজর। এরপর ১৯৬৪ সালে হন উগান্ডা আর্মির ডেপুটি কমান্ডার আর ১৯৬৫ সালে কমান্ডার। ১৯৭০ সালে আর্মড ফোর্সেসের কমান্ডার হবার কয়েক মাস পরেই নির্বাচিত মিল্টন ওবোতে সরকারকে উৎখাত করে উগান্ডার রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেন।
অবৈধভাবে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করার পর ইদি আমিনের শখ হয় বিভিন্ন ধরণের সামরিক পদক সংগ্রহের। বিভিন্ন দেশের আর্মিকে টাকা দিয়ে তিনি কিছু পদক যোগাড়ও করেন। কিন্তু অনেক চেষ্টা চরিত্র করেও তিনি বৃটিশ আর্মির সর্বোচ্চ সামরিক পদক ভিক্টোরিয়া ক্রস যোগাড় করতে ব্যর্থ হন। তিনি বারবার দাবী করতে থাকেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বৃটিশ আর্মির হয়ে তিনি অনেক যুদ্ধ টুদ্ধ করেছেন, তাই ঐ পদকটি তার প্রাপ্য। বৃটেনের বিভিন্ন লবিস্ট ফার্মকে বিস্তর টাকা পয়সাও দেন। কিন্তু ১৯৪৬ সালে, অর্থাৎ বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার ১ বছর পরে আর্মিতে যোগ দিয়ে তিনি কিভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিলেন এটা ছিল একটা রহস্য। এই রহস্য ভেদ না করতে পেরেই সম্ভবত বৃটেনের রাজকীয় সেনাবাহিনী আর ইদি আমিনকে ভিক্টোরিয়া ক্রস দেবার জন্য রানীর কাছে সুপারিশ করেনি। তার কপালে আর ভিক্টোরিয়া ক্রস জুটলো না। বিষয়টা নিয়ে ইদি আমিনের সাথে বৃটেনের কুটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটলো।
ইদি আমিন অবশ্য দমবার পাত্র ছিলেন না। তিনি নিজেই উগান্ডা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে 'ভিক্টোরিয়াস ক্রস' নামে একটি বীরত্বসূচক পদক ঘোষণা করে সেটি নিয়ে নিলেন। এবং অন্যান্য পদকের সাথে এটিও তার ইউনিফরমে যুক্ত করলেন।
স্বৈরশাসকরা যেহেতু জানেন তাদের কোন বৈধতা নেই, তাই তারা সব সময়ই এসব খেতাব, পদক, ডিগ্রি ও পুরষ্কার যোগাড় করে নিজের বৈধতা আদায়ের চেষ্টা করেন। বলা বাহুল্য এগুলো যোগাড়ের জন্য দেশ ও জনগনের টাকা খরচ করতেও তাদের বাধে না।
Powered by Blogger.