গোয়েন্দা থেকে রাষ্ট্রপ্রধান: পুতিন
অনেকটা ভাগ্য নাকি নিজ ধীশক্তি? কোন জিনিসটা বেশি জরুরি? অনেকে ভাবেন নিজের শক্তি অনেকে ভাবেন ভাগ্য। আমি বলি দুটোর পারমুটেশন কম্বিশন ঠিক হলে তবেই পাওয়ার নামক সিন্দুকের চাবি খুলবে। আর সেটার বাস্তব উদাহরণ আমরা সুদূর রাশিয়ায় দেখতে পাই। ২০ বছর ধরে একজন ক্ষমতায় থাকা কোন সহজ কথা নয়, তাও আবার যে কিনা তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন একজন স্পাই হিসেবে। যিনি সাবেক সোভিয়েতের কেজিবি নামক গোয়েন্দা সংস্থায় কাজ করতেন।
ক্যারিয়ারে অনেক চরাই উৎরাই পার করেছেন।আর যখন সাবেক রাস্ট্রপ্রধান বরিস ইয়েলতসিন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেন তখন সেটা পুতিনের জন্য অনেক বড় সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই মোক্ষম সুযোগের ঠিক ব্যাবহারটাই তিনি করেন। প্রায় ২০ বছর যাবত তিনি রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতার মালিক। সবচেয়ে অবাক লাগে তার সবাইকে ম্যানেজ করে রাখা কিংবা অন্ত্যন্ত কঠোরভাবে নিজের পথের কাঁটাকে সরিয়ে ফেলা।রাশিয়ায় তার বন্ধু নেই,নেই তার উপরে কথা বলার কেউ।বরং তরূণদের অনেকেই তাকে পছন্দ করেন। আপনি তাকে অনেক বাজে নামেই ডাকতে পারেন, কিন্তু আমিও বলবো এটা ফ্রেন্ডলি ফুটবল ম্যাচ না। মাঠটা রাজনীতির।
রাজনীতির মাঠকে অনেক ক্ষেত্রেই গ্লাডিয়েটরের খাঁচা মনে করা যেতে পারে।ডু অর ডাই। যাই হোক আপনি কি তবে তাকে রাশিয়ার হিটলার আখ্যা দিবেন? একবারও তার অর্জনকে দেখলেন না? রাশিয়ার ভেঙ্গে যাওয়া অর্থনীতিকে যিনি বলা একাই পুরনো যায়গায় ফিরানোর চেস্টা করে যাচ্ছেন।দারিদ্রের হার যেখানে ছিলো ২৮ ভাগ সেখানে এখন ১৩ ভাগ। পররাষ্ট্রনীতিতেও অনেকাংশেই সফল তিনি।
তার বুকের পাটা কেমন তাতো ক্রিমিয়া জয় ও সিরিয়ায় তার যুদ্ধ করা দেখেই বুঝে নেয়া যায়।চীনের সাথে এমনকি তুরস্কের সাথেও তৈরী করেছেন সমযোজী জোট, শেয়ারিং কেয়ারিং বেশ ভালোই চলছে।আর তাইতো আমেরিকাকে নির্দ্বিধায় হাতের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে দিতে পারেন।
২০০৭ সালে টাইম ম্যাগাজিনের অন্যতম ব্যাক্তিক্ত হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে হয়েছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যাক্তি। ফোরবেস ম্যাগাজিন অনুযায়ী যিনি ছিলেন টানা ২০১৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাস্ট্রপ্রধান। অন্য দশজনের চেয়ে ভিন্ন লাইফস্টাইলে চলা পুতিন সাহেব অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের করেন অবাক। ইন্টারনেট খুব কম ব্যাবহার করেন। থাকেন শহর ছেড়ে অনেক দূরে।মুঠোফোন ব্যাবহারের বদলে ব্যাবহার করেন আদিম কালের ল্যান্ডফোন। লেখা: আধুনিক সমরাস্ত্র অবলম্বনে