ফ্রান্সের অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন
নিউক্লিয়ার এট্যাকে সক্ষম দেশ গুলোর ভেতর ফ্রান্স এমন একটি দেশ যাদের নিউক ডেলিভারি দেবার একটাই মাধ্যম রয়েছে আর তা হলো SLBM বা সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ যোগ্য ব্যালিস্টিক মিসাইল। স্নায়ু যুদ্ধ শেষে ফ্রান্স সিদ্ধান্ত নেয় গ্রাউন্ড ব্যেসড নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স রিটায়ার্ড করে শুধুমাত্র ডিফেন্সিভ থেকে সাবমেরিন লাঞ্চড নিউক্লিয়ার ব্যালিস্টিক মিসাইল সার্ভিসে রাখার।
ফলসরূপ ফ্রান্স তাদের নিউক্লিয়ার ওয়েপন্স ডেলিভারের জন্য আরো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সাবমেরিন তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয় আর এই পরিকল্পনা থেকেই প্রথম ১৯৯৭ সালে সার্ভিসে প্রবেশ করে স্টিলথ ফিচার সমৃদ্ধ Triomphant-class Ballistic Missile Submarine. ফ্রান্সের নৌবাহিনীর হাতে এই ক্লাসের মোট ৪ টি সাব রয়েছে যেগুলোর ডিসপ্লেস্মেন্ট ১২,৬৪০ টন (সার্ফেস) এবং এই SSBN গুলো ১৩৮ মিটার দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট।
পৃথিবীর মাত্র দুই-তিনটি ক্লাসের SSBN আছে যা পানির ৩৫০ মিটারের অধিক গভীরতায় যেতে সক্ষম আর এর ভেতর Triomphant Class একটি,, স্টিলথ এই সাবমেরিন টি ৪০০ মিটার এর ও বেশি গভীরতায় যেতে সক্ষম। এতে পাম্পজেট প্রপুলশান ব্যবহারের ফলে এটি পানির নিচে খুব কম শব্দ করে, ফলে একে ডিটেক্ট করা আরো কঠিন হয়েছে। এর ডিজাইন, স্টিলথ কোটিং, নির্মান ম্যাটেরিয়াল ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ফলে একে ডিটেক্ট করা অন্য যেকোনো সাবমেরিন এর চাইতে দশগুণ বেশি কঠিন এবং তা প্রমাণিত

ফ্রান্সের DCNS এর তৈরি এই অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন এর অস্ত্রসম্ভারে রয়েছে 'এয়ারবার ডিফেন্স & স্পেস' এর তৈরি ১৬ টি M45 অথবা M51 Submarine Launched Ballistic Missile. আপাতত দুইটি সাবে এডভান্সড M51 SLBM সংযুক্ত করা হয়েছে এবং বাকি ২ টিতে ২০১৮ সালের ভেতর M51 SLBM সংযুক্ত করা হবে।
এছাড়াও এতে F-17 Torpedo এর জন্য রয়েছে ৪ টি 533mm টর্পেডো টিউব। আরো রয়েছে Exocet SM39 Anti-Ship Missile, তবে AShM গুলো শুধুমাত্র সাবমার্চড থাকা অবস্থাতেই ফায়ার করা যায়। এছাড়াও ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার এর জন্য রয়েছে ARUR-13। ২৫+ নট গতিবেগ সম্পন্ন এই Triomphant Class সাবমেরিন পরিচালনার জন্য ১৫ জন অফিসার ও ৯৬ জন নাবিকের প্রয়োজন হয়। আর এই অত্যাধুনিক SSBN Submarine তৈরির প্রতি ইউনিট খরচ £4.25+ বিলিয়ন ইউরো।
আরো পড়ুন : জাহাজ এবং সাবমেরিন হামলা থেকে বাঁচার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা