DF-21D এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল

 

এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল

শিরোনাম দেখে আপনার ভ্রু কি চান্দিতে চলে গেছে? এন্টিশিপ শ্রেণীর মিসাইল তো ক্রুজ মিসাইল হয়, জাহাজ মারতে ব্যালাস্টিক মিসাইল মারবে কোন পাগলে?

এসব প্রশ্ন যাদের মাথায় আসবে তারা নিশ্চিতভাবেই ব্যালাস্টিক ও ক্রুজ মিসাইলের পার্থক্য বুঝেন। দুইটা শ্রেণীর মিসাইল (যেমন নায়ক টম ক্রুজ আর ফুটবলার টনি ক্রুজ )
সহজ বাংলায় ব্যালাস্টিক মিসাইল সোজা চান্দি বরাবর উপ্রে ফায়ার হবে, তারপর আকাশ বাতাস মহাকাশ ঘুইরা তারপর এনিমির মাথায় আইসা পড়বে। আর ক্রুজ মিসাইল মারলে ঐটা খুশিতে ঠেলায় ঘুরতে ঘুরতে উড়তে উড়তে এনিমির কোলে গিয়া পড়বে।

বুঝেন নাই মিয়া? বেশি সহজ বাংলায় বলছি? আচ্ছা শুদ্ধ বাংলায় বলি, রকেট ইঞ্জিন চালিত ব্যালাস্টিক মিসাইল ব্যালাস্টিক ফ্লাইট প্যাথ অনুসরণ করে বায়ুমন্ডলের উপরের অঞ্চলে উঠে যায়, তারপর প্রচন্ড গতি নিয়ে টার্গেটের দিকে ধেয়ে যায়। বিভিন্ন ধরনের জেট ইঞ্জিন চালিত এন্টিশিপ ক্রুজ মিসাইল হাই-সাবসনিক (ম্যাক ০.৯+) বা সুপারসনিক (ম্যাক ১+) গতি নিয়ে টার্গেটের দিকে খুবই নিচু হয়ে সাগরের সার্ফেস ঘেষে (সি-স্কিমিং ফ্লাইট) উড়ে যায়। 

 

এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল

দুনিয়ার সব এন্টিশিপ মিসাইল ই ক্রুজ মিসাইল।শত্রু রাডারে ধরা ও CIWS দ্বারা মারা খাওয়ার খাওয়ার ভয় থাকলেও নায়ক টম ক্রুজ ই সেরা। অন্যদিকে জার্মান ফুটবলার টনি ক্রুজ (ক্রুস আরকি) তথা এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল খুবই হাই ভ্যালু টার্গেট যেমন শত্রুর এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বা বন্দর কে উড়িয়ে দেয়ার জন্য ব্যবহৃত হয়। এগুলোর গতি খুবই বেশি, একুরেসি মেইনটেইন করাটাও চ্যালেঞ্জের বিষয়।

 

প্রাক্তণ সোভিয়েত ইউনিয়নের পর একমাত্র চীনের ই 'ক্যারিয়ার কিলার' এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল বানিয়েছে। তাদের ডং ফেং ২১ এর D ভার্শনকে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার মারার উপযোগী করে বানানো হয়েছে। সোভিয়েত R-27k ব্যালাস্টিক এন্টিশিপ মিসাইলের রেঞ্জ ছিল ৭৪০ কিলোমিটার, এতে ০.৫ থেকে ১ মেগাটন নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড নেয়া যেত। এটি টার্গেটের ৩৭০ মিটারের মধ্যে হিট করতে পারতো। তবে এটি কখনও সার্ভিসে আসেনি। রাশিয়া বর্তমানে এয়ার লঞ্চড হাইপারসনিক ক্রুজ মিসাইল 'কিনজাল' ব্যবহার করে।

Dong-Feng 21 (NATO reporting name 'CSS-5' বিশ্বের প্রথম অপারেশনাল এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল। এটি ২০০৮ সালে সার্ভিসে আসলেও ২০১৫ সালে প্রথম প্যারেডে প্রদর্শন করে চীন। এটি একটি সিঙ্গেল স্টেজের সলিড ফুয়েল রকেট ইঞ্জিন চালিত মিসাইল যার গতি ম্যাক ১০! ১৪, ৭০০ কেজির এই মিসাইলে ৬০০ কেজির মত কনভেশনাল/নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড থাকে। এতে ১-৬ টি নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড বহন করতে পারে, ধ্বংসক্ষমতা ২০০-৫০০ কিলোটন। এটির রেঞ্জ ২০০০ কিলোমিটার। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা এর রেঞ্জ ১৬৬৬ থেকে ২৭৭৮ কিঃমিঃ। এর একুরেসি কত সেটি জানা যায়নি তবে A ও B ভার্শনের CEP যথাক্রমে ৫০ ও ১০ মিটার। 

 

এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল

এটি CEP ৩০ মিটার অনুমান করছেন অনেকে। চীন ২০০৯ থেকে এখন পর্যন্ত চারটি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়েছে এই মিসাইল গাইড করার জন্য, এছাড়া নতুন ডিজাইনের ওভার দ্য হরাইজন রাডার ও সার্ভিসে এনেছে। যুক্তরাষ্ট্র একে ক্যারিয়ার কিলার মিসাইল হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং এর সিঙ্গেল হিটে ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রূপের বারোটা বেজে যাবে তা স্বীকার করেছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে নিজেদের স্যাটেলাইট নজরদারি ব্যবস্থা উন্নতকরণ ছাড়াও এটি ঠেকানোর মত ইন্টারসেপ্টর মিসাইল SM-3 এর আপগ্রেড ভার্শন সার্ভিসে আনতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারিয়ার স্ট্রাইক গ্রূপের ব্যালাস্টিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম অন্য যেকোনো দেশের চেয়ে শক্তিশালী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে গভীর সাগরে না থাকলে এই মিসাইলের বিরুদ্ধে এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ারগুলো নিজেকে রক্ষা করতে বেগ পেতে হবে বলে আশঙ্কা করেছেন মার্কিন সামরিক বিশেষজ্ঞরা।

একই শ্রেণীর ভারতের ধানুষ মিসাইল রয়েছে, এটি মূল পৃথি ৩ ব্যালাস্টিক মিসাইলের একটি ভার্শন যার রেঞ্জ ওয়ারহেডের ভিন্নতা অনুযায়ী ৩৫০ থেকে ৭৫০ কিঃমিঃ। একুরেসি ২৫ মিটার, এছাড়া ইরানের পার্সিয়ান গালফ এন্টিশিপ ব্যালাস্টিক মিসাইল রয়েছে যার রেঞ্জ ৩০০ কিঃমিঃ, গতি ম্যাক ৩। এতে ৬৫০ কেজি ওয়ারহেড বহন করা যায়। হরমুজ প্রণালীতে মার্কিন ক্যারিয়ারের বিরুদ্ধে CEP ২ মিটার সমৃদ্ধ এই মিসাইল একটি গেম চেঞ্জার অস্ত্র। 

-আধুনিক সমরাস্ত্র অবলম্বনে: এমআরনাইন


নিয়মিত রোমাঞ্চকর সামরিক বিষয়ক পোষ্ট পেতে লাইক দিন আমাদের ফেইসবুক ফ‌্যান পেইজে- Click here


সাবস্ক্রাইব করুন লেখকের ইউটিউব চ‌্যানেল Shohan MonsteR
Powered by Blogger.