মেইন ব্যাটল ট্যাংক হচ্ছে জার্মানীর তৈরী লেপার্ড ২।

মেইন ব্যাটল ট্যাংক হচ্ছে জার্মানীর তৈরী লেপার্ড ২। 



বর্তমান সময়ের অন্যতম ভালো, কারও কারও মতে সবচেয়ে ভালো (তাদের মধ্যে অবশ্য আমিও অন্তর্ভুক্ত tongue emoticon ) মেইন ব্যাটল ট্যাংক হচ্ছে জার্মানীর তৈরী লেপার্ড ২। এই ব্যাটল ট্যাংকটি কিন্তু একদিনে তৈরী হয়নি। সেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে ট্যাংক সম্পর্কে অর্জিত জার্মানদের সকল জ্ঞানই এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে আজকে কিন্তু আমরা এই ট্যাংক সম্পর্কে আলোচনা করব না। আজকের বিষয় এর পূর্বসূরী লেপার্ড ১ ট্যাংক। এই লেপার্ড ১ ট্যাংকগুলোর ডেভেলাপমেন্ট শুরু হয় পঞ্চাশের দশকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের হারের পর জার্মানদের একরকম জোর করেই তাদের তৈরী ট্যাংক বাদ দিয়ে আমেরিকানদের এম-৪৭ ও এম-৪৮ ট্যাংক ব্যবহারে বাধ্য করা হয়। কিন্তু পঞ্চাশের দশকের মধ্যভাগে জার্মানরা একটু সুস্থির হওয়ার পরই নিজেদের সেনাবাহিনীর পুনঃগঠন শুরু করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় যে আমেরিকান ট্যাংক বাদ দিয়ে তাদের নিজেদের তৈরী উন্নত মানের ট্যাংক প্রয়োজন। ফলশ্রুতি শুরুহয় 'স্ট্যান্ডার্ড প্যানজার' প্রোগ্রামের এবং জন্মনেয় এই লেপার্ড ১ ট্যাংক। যখন এই ট্যাংকের ডেভেলাপমেন্ট শুরুহয় তখন ধারণা করা হতো কোন ভাবেই 'হিট' বা হাই এক্সপ্লোসিভ অ্যান্টি ট্যাংক রাউন্ড প্রতিহত করা সম্ভব নয়। তাই যখন এই ট্যাংকের ডেভেলাপমেন্ট শুরু হয় তখন মূখ্য উদ্দেশ্য ছিল একে যতটা সম্ভব মোবিলিটি ও ফায়ার পাওয়ার প্রদান করা। ফলে এর আর্মারের পরিমাণ কম ছিল যারফলে ভর ছিল পূর্বের অন্যান্য জার্মান (টাইগার সিরিজ) ট্যাংকের চেয়ে কম। এই ট্যাংকগুলোর ভর ছিল মোটামুটি ৪০টন ও এতে ৮১৯ হর্সপাওয়ারের মাল্টি ফুয়েল ইঞ্জিন লাগানো হয়েছিল ফলে এই ট্যাংকগুলো মোটামুটি মসৃণ রাস্তায় প্রায় ৬৫ কিলোমিটার প্রতিঘন্টার গতিতে চলতে সক্ষম ছিল। আর ফায়ারপাওয়ারের জন্য এতে তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী ১০৫ মি.মি. মেইন গান লাগানো হয়। অন্যান্য ইউরোপীয় ট্যাংকের মতো এই ট্যাংকগুলো চালাতেও চারজন ক্রুর প্রয়োজন হতো এবং আর্মার তুলনামূলক দুর্বল হলেও তা ক্রুদের ২০মি.মি. রাউন্ডের র‍্যাপিড ফায়ার, কেমিক্যাল ও বায়োলজিকাল ওয়পন থেকে ক্রুদের সুরক্ষা দিতে সক্ষম ছিল। এছাড়াও তখন ছিল কোল্ড ওয়রের সুচনালগ্ন এবং সকলেরই নিউক্লিয়ার অ্যাটাকের ভয় ছিল তাই এদের নিউক্লিয়ার রেডিয়েশনের মধ্যেও যাতে অপারেশন পরিচালনা করতে পারে সেভাবেই তৈরী করা হয়েছিল। প্রায় ৪০ বছর নিরলস সার্ভিস দেয়ার পর একবিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের মধ্যভাগে এদের ব্যবহারকারী প্রায় ১৫টি দেশ বিভিন্ন ট্যাংক দ্বারা এদের রিপ্লেস করা শুরু করে.....

-আধুনিক সমরাস্ত্র অবলম্বনে সোহেল আদনান। 

Powered by Blogger.