ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন-হামাস।
ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন-হামাস। |
♦♦♦ মূলত ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দল যারা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের "গাজা" নামক স্থানের রাজনৈতিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রক সংগঠন। মূলত ইসরাইলী আগ্রাসন থেকে ফিলিস্তিন ভূখণ্ড রক্ষার্থে শেখ আহমেদ ইয়াসিন এবং মাহমুদ জাহার ১৯৮৭ সালে হামাস প্রতিষ্ঠিত করেন। আহমেদ ইয়াসিন ছিলেন পঙ্গু কিন্তু তবুও যুবক বয়স থেকেই তিনি ছিলেন গাজার নেতা।১৯৭৮ সালে ৪৯ বছর বয়সী শেখ আহমেদ ইয়াসিন ফিলিস্তিনিদের সাহায্যের জন্য আল মুজাম্মা আল ইসলামি নামে একটি ইসলামি সংগঠন গড়ে তুলতে অধিকৃত ইসরায়েলী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন৷ ইসরায়েল তা মন্জুর করে, কেননা ইজরাইলের লক্ষ্য ছিল গাজায় জাতীয়তাবাদী জআন্দোলন ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা পিএলও এর গুরুত্ব হ্রাস করা। কিন্তু ইজরাইলের সেই প্রচেষ্টা বুমেরাং হয়ে যায় । খুব সহসাই তারা বুঝতে পারে শেখ আহমেদ ইয়াসিন
ঝানু মাল এবং পাক্কা মুসলমান। ইজরাইলের মাথায় তাল রেখে কায়দামত ঠিকই হামাসকে দাঁড় করিয়ে ফেলেছে। ১৯৮৮ সালে গৃহীত হয় “হামাস চার্টার” যার লক্ষ্য হলো অধিকৃত ফিলিস্তিন থেকে দখলদারিত্বের অবসান ঘটানো। বর্তমানে ফিলিস্তিন এর ক্ষমতাধর ব্যক্তি "খালেদ মিশাল" হামাস এর প্রধান। এই সংগঠনটির একটি সামরিক শাখা রয়েছে যার নাম " ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড" মূলত সামরিক প্রেমিদের কাছে এই ব্রিগেড টির জনপ্রিয়তাই বেশি তবে হামাস নামে। ইসরাইল, আমেরিকা, কানাডা,ইউরোপ এবং জাপান এই সংগঠন কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করলেও, বাংলাদেশ, রাশিয়া, ইরান, তুরস্ক, সৌদি প্রভৃতি রাষ্ট্র এদের স্বাধীনতা কামি সংগঠন হিসেবে মৌখিক ভাবে আখ্যায়িত করে থাকে।
.
.
♦♦♦ ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম এর নামে যিনি ১৯৩০ সালে আল- কাসসাম ''ব্ল্যাক হ্যান্ড" নামে বৃটিশ এবং ইহুদী আধিপত্যবাদ বিরোধী একটি সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন।
.
মূলত এই সশস্ত্র বিগ্রেড টি গড়ে তুলার প্রধান কারন হচ্ছে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও ইহুদীবাদি ইসরাইলিদের আগ্রাসন এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ফিলিস্তিন তথাকথিত গাজাবাসি কে সুরক্ষা প্রদান করা। বর্তমানে এই ব্রিগেড টির মূখ্য উদ্দেশ্য দখলদার ইসরাইল এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ফিলিস্তিন কে দখলদারিত্বের হাত থেকে রক্ষা। হামাস এর এই সামরিক শাখা ফিলিস্তিন এ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এই সংগঠন নিজেদের জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের প্রতীক বলে মনে করেন। এই ব্রিগেড টি হামাস এর একটি শাখা হওয়া সত্যেও এরা সবচাইতে প্রভাবশালী এবং এই ব্রিগেড এর স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা আছে। কাসসাম ব্রিগেড এর তথ্য ও সামরিক বিষয়াদি সংক্রান্ত বিষয়াদি হামাস কে জানানো হয় না।
সংগঠনটির বর্তমান এবং দীর্ঘমেয়াদী নেতা বা প্রধান হচ্ছেন "মুহাম্মাদ দেইফ"। মজার ব্যাপার হলো আজ অব্দি মোসাদ এই ব্যক্তি কে ৫ বার গুপ্তহত্যার চেষ্টা চালায় কিন্তু বিভিন্ন কারনে তিনি প্রতিবার বেচে জান এছাড়াও খালেদ মিশাল কেও বহুবার হত্যার চেষ্টা করে মোসাদ কিন্তু আজো সফলতা পায়নি। আজো ইসরাইল এর সবচাইতে বড় মাথা ব্যথার কারন হচ্ছে এই দুই ব্যক্তি .......... [অনেকে বলে মোসাদ যার পিছনে লাগে তাকে নাকি হত্যা করেই ছারে, কিন্তু মোসাদ এর সামনে কলা ঝুলিয়ে আজো এই ব্যক্তিরা জীবিত..............
.
♦♦♦ হামাস এর এই ব্রিগেড এর অপারেশন ও দক্ষতা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি, বিভিন্ন সময় ইসরাইলী আগ্রাসন এর মুখে বারম্বার প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে এই "ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড"। ইসরাইল এর প্রতিটা আগ্রাসন এর জবাব দিয়েছে এই ব্রিগেড। আজ অব্দি বিভিন্ন ইসরাইলী আগ্রাসনে এই ব্রিগেড এর হাতে শতশত ইসরাইলী সৈন্যর মৃত্যু হয়েছে। এর পিছনে রয়েছে সবচাইতে বড় যে কারন তা হচ্ছে "গেরিলাযুদ্ধ"। হামাসের অতর্কিত আক্রমণ, রকেট হামলা ও তিব্র প্রতিরোধ এর কারনেই আজ অব্দি গাজা ফিলিস্তিন এর ভূখণ্ড হয়ে আছে নয়তো.....!
.
♦♦♦ বর্তমানে ইজ্ আদ-দীন আল কাসসাম ব্রিগেড এ প্রায় ৪০ হাজার সেচ্ছাসেবী রয়েছে যারা স্বাধীন ফিলিস্তিন এর সপ্ন বুকে লালন করে প্রতিনিয়ত জীবনের সাথে লরাই করে যাওয়া গাজাবাসির পাসে রয়েছে। এই ব্রিগেড টির হাতে রয়েছে বিভিন্ন অত্যাধুনিক সব ক্ষুদ্রাস্ত্র।
.
ইজ্ আদ-দীন আল-কাসসাম ব্রিগেড এর অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ♦অটোমেটিক এসল্ট রাইফেল ♦আরপিজি&গ্রেনেড ♦সুইসাইড-বেল্ট ♦বম্ব ♦মর্টার ♦মাল্টিপল রকেট লাঞ্চার ♦এক্সপ্লোসিভ ♦বিভিন্ন ধরনের রকেট ইত্যাদি। #আল-বানা, #বাতার, #ইয়াসিন, #কাসসাম তাদের উল্লেখযোগ্য রকেট এবং এদের বিভিন্ন ভার্সন ও আছে। এছাড়াও ইরান থেকে তারা সল্পপাল্লার বিভিন্ন রকেট পেয়েছে এবং এখন এই ব্রিগেড নিজেরাই বিভিন্ন ধরনের রকেট সহ ক্ষুদ্রাস্ত্র নির্মান করে থাকে, যেসব রকেট এর রেঞ্জের ভেতর ইসরাইল এর বিভিন্ন শহর রয়েছে। মূলত হামাস এর এই ব্রিগেড টির ট্রেইনিং সম্পূর্ণ সামরিক বাহিনীর কায়দা বা অনুকরণে হয়ে থাকে যা গাজাতেই হয়, এই সমস্ত ট্রেইনিং এ বিভিন্নসময় সিরিয়া ও ইরান সহায়তা প্রদান করে থাকে।
.
এই সশস্ত্র বিগ্রেড এর হাতে বিভিন্ন রকমের এন্টি-ট্যাংক-মিসাইল ও রয়েছে যেমন - Kornet-E , Konkurs-M , Bulsae-2, 9K11 Malyutka এবং MILAN মিসাইল। এছাড়া এন্টি এয়ারক্রাফট মিসাইল(MANPADS) ও রয়েছে যেমন- SA-7B , SA-18 Igla, SA-24 Igla-S মিসাইল। এইসকল অত্যাধুনিক ওয়েপন্স তারা বিভিন্ন সময় সিরিয়া, লিবিয়া ও ইরান থেকে পেয়েছে। এমনকি ইসরাইলী আগ্রাসন এর সময় জব্দ করা বেশ অনেক ধরনের ক্ষুদ্রাস্ত্র হামাস এর হাতে রয়েছে। এছারা হামাস এর হাতে #আবাবিল-১ UAV/ ড্রোন ও রয়েছে যা মূলত ইসরাইলী একটি ড্রোন এর কপি, হামাস ইসরাইলী ঐ ড্রোন টিকে আটোক করে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে এর কপি তৈরি করে থাকে ......এক্ষেত্রে তারা ইরান এর সহযোগীতা পেয়ে থাকে।
.