একজন সামরিক অফিসারের কিছু করুন তিক্ত সত্য কথা।"Believe it or not সেনাবাহিনীর অফিসাররা হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মূর্খ"
Bangladesh Army |
আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন ভাবতাম "বাহ!!
কি আনন্দের ব্যাপার! শুধু HSC পাস করেই
আর্মি অফিসার হওয়া যায়!!"
কিন্তু আমি যত বড় হলাম, তত আমার বোধগম্য
হলো যে আমি যতটা সহজ ভাবছি আর্মি
অফিসার হওয়া ততটা সহজ নয়।
নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতেই পদযাত্রা
করলাম সেনাবাহিনীর দিকে। তারপরই
বুঝতে পারলাম সেনাবাহিনীর প্রকৃত
মহিমা।
প্রতিটি রিবন, প্রতিটি উইং, প্রতিটি
র্যাংক পেতে তাকে যে কতগুলো
একাডেমিক কিংবা ফিল্ড কোর্স করতে হয়,
কতগুলো দেশি-বিদেশি সনদপত্র অর্জন করতে
হয়, কতদিন না খেয়ে থাকতে হয়, কত দিন
বরফের মত ঠান্ডা পানিতে নামতে হয়, কত
দিন মরতে মরতে বাঁচতে হয়, কত দিন
ডাস্টবিনের মধ্যে ঘুমাতে হয়, কতদিন নর্দমার
পানিতে গোসল করতে হয়, কত দিন নাক-মুখ
দিয়ে রক্ত ঝড়াতে হয, কত দিন জঙ্গলের মধ্যে
হিংস্র প্রাণির সাথে লড়াই করতে হয়,
কতদিন লাফ ঝাঁপ দিতে গিয়ে
হাড্ডিগুড্ডিতে ফেকচার বানাতে হয়,
কতদিন তাকে সাপ বিচ্চুর কামড় খেতে হয়,
কত রাতদিন তাকে একাধারে না ঘুমিয়ে
থাকতে হয়, কত হাজার হাজার পুস আপ, ফ্রন্ট
রোল, চিন আপ, মাইল টেস্ট দিতে হয়, কত
শীতের রাতে তাকে সাঁতার কেটে নদী
পাড়ি দিতে হয়, কত দিন তাকে সাপ ব্যাঙ
খেয়ে থাকতে হয়, কত রাত তাকে জঙ্গী
মশার কামড় খেয়ে জ্বরে কাতরাতে হয়, কত
ঘন্টার পর ঘন্টা তাকে রোপিং করতে করতে
হাতের সম্পূর্ণ চামড়া বিসর্জন দিতে হয়, কত
দিন তাকে মায়ের মমতার স্মৃতিকে বুকে
আগলে ধরে আরেক মা দেশের জন্য মৃত্যুর ঝুঁকি
নিয়ে শত্রুর সীমানায় পাড়ি জমাতে হয়, চরম
অসুস্থতা নিয়েও কত দিন তাকে অস্ত্র হাতে
দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, তাকে কতটা কষ্ট সহ্য
করতে হয়, তা কেবল তারাই বুঝতে পারে। শুধু
তারাই বুঝতে পারে।
কিন্তু এত কষ্ট করার পরও দিন শেষে তাকে
ঠিকই বই নিয়ে বসতে হয়, কলেজের বই পড়তে
হয়, ভার্সিটির বই পড়তে হয়, ডাক্তারি বই
পড়তে হয়, প্রকৌশল বিদ্যার বই পড়তে হয়,
আন্তর্জাতিক বই পড়তে হয় কারণ তাকে
ভার্সিটি/ডাক্তারি/সমমানের পরীক্ষায়
পাস করতে হবে, খুব ভালভাবেই পাস করতে
হবে কারণ সেই রেজাল্ট দিয়েই সে
বিশ্বের অন্যান্য দেশের সেনাবাহিনীর
সাথে নিজ দেশের পতাকা উত্তোলনের
সুযোগ পাবে। এবং তার পড়ালেখার এই
চেষ্টায় সে সফলও হয়, খুব ভালভাবেই সফল হয়।
কিন্তু এত কিছুর পরও কিছু মানুষ বলে সেনা
কর্মকর্তারা নাকি HSC পাস, তার নাকি
মূর্খ।
বর্তমান ডিজিটাল কমিউনিকেশনের যুগেও
যারা এই ধরনের কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে
আমি কোন কথাই বলব না। কারণ তারা
আসলে বাচ্চা, বড় কিছু ভাবার যোগ্যতা
কিংবা মানসিকতা তাদের এখনও হয়নি।
এখনও তারা বুঝে শুনে কিছু বলার ক্ষমতা
অর্জন করতে পারেনি। একটু বয়স
হোক.......তারপর নিজেই সবকিছু বুঝতে
পারবে।
ভাল থাকবেন সেই সব কচি খোকারা,
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আপনাদের
মানসিকতা বড় হওয়ার অপেক্ষায় আছে...........
লিখাঃ মাজহারুল ইসলাম,বাংলাদেশ আর্মি ম্যাগাজিন।