চীনের ফ্লাংকার সিরিজের এডভান্স স্টিলথ ভার্সন।
চীনের ফ্লাংকার সিরিজের এডভান্স স্টিলথ ভার্সন। |
চীনের গণমাধ্যম এবং একাধিক সোস্যাল মিডিয়ার
তথ্যমতে চীন সাম্প্রতিক সময়ে অত্যন্ত
গোপনে ফ্লাংকার সিরিজের যুদ্ধবিমানের মডিফাইড
এডভান্স স্টিলথ ভার্সন উন্নয়নে ব্যাপকভাবে কাজ
করে যাচ্ছে এবং ২০১৮ সাল থেকে স্টিলথ ভার্সন
ফ্লাংকার সমপর্যায়ের এয়ার সুপিউরিটি যুদ্ধবিমান
প্রোডাকশন লাইনে যেতে পারে বলে
উল্লেখ করা হয়েছে। আর বাস্তবে সত্যিই যদি
চীন স্টিলথ ভার্সন ফ্লাংকার উৎপাদন করতে সক্ষম
হয় তাহলে এটা চীনের জন্য বড় ধরনের
প্রযুক্তিগত অগ্রগতি হিসেবে বিবেচনা করা যাবে।
এছাড়া সাম্প্রতিক কালে রাশিয়ার থেকে ২৪টি
অত্যাধুনিক এসইউ-৩৫ ফ্লাংকার-ই ক্রয়ের মাধ্যমে
চীন তার নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
শক্তিশালীকরনে এক ধাপ এগিয়ে গেল।
তবে এক্ষেত্রে আমি কিছুটা ভিন্নধর্মী
বিশ্লেষণমুমক লেখা উপস্থাপন করতে চেষ্টা
করব। মুলত চীন এক দশক থেকে তাদের নিজস্ব
স্টিলথ প্রযুক্তির জে-২০ নিয়ে ব্যাপক গবেষণা ও
উন্নয়ন শুরু করে এবং এর দুই বছরের মধ্যে
পরবর্তী আপগ্রেড ভার্সন জে-৩১ নিয়ে কাজ
শুরু করে এবং বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে এ দুই
ভার্সনের বেশ কিছু প্রটোটাইপ কপি তৈরি সহ
একাধিক উড্ডয়ন সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করা
হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এখনো
পর্যন্ত জে-২০ এবং জে-৩১ প্রোডাকশন লাইনে
আসতে পারেনি তা কিন্তু এক রকম নিশ্চিত। মুলত
চীনের উচিত ছিল আগে জে-২০ এর কমপ্লিট
স্টিলথ ভার্সন তৈরি করে তা বিভিন্ন সামরিক মিশনে
সফলভাবে ব্যবহার করা এবং পাশাপাশি ব্যাপক উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু করা। যেমনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের নিজস্ব উৎপাদিত এফ-২২ রেপটর স্টিলথ এয়ার সুপিউরিটি যুদ্ধবিমান ২০০৭ সালে সরাসরি সার্ভিসে এনে এখনো পর্যন্ত এর আপগ্রেড অব্যাহত
রেখেছে এবং কার্যকর ভাবে বিভিন্ন মিশনে
সফলভাবে ব্যবহার করে যাচ্ছে। এছাড়া এফ-২২ এর
অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে
এফ-৩৫ স্টিলথ এয়ার সুপিউরিটি যুদ্ধবিমানের উৎপাদন শুরুর পাশাপাশি এর রপ্তানির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে। আবার অন্য দিকে রাশিয়া ও ভারত যৌথ উদ্যোগে পিএকে এফএ টি-৫০ সুপার স্টিলথ এয়ার সুপিউরেটি যুদ্ধবিমান এর শতাধিক বার
পরীক্ষামূলক সফল উড্ডয়ন ও অপারেশন টেস্ট
সম্পন্ন করে ২০১৮ সাল থেকে ব্যাপকভাবে
উৎপাদন শুরু করতে পারে বলে মনে করা হয়। ঠিক
একই ভাবে জাপান তার নিজস্ব এক্স-২ এবং দক্ষিণ
কোরিয়া ও ইন্দোনেশিয়া যৌথভাবে স্টিলথ
টেকনোলজি বেসড যুদ্ধবিমান উন্নয়নে
গভীরভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আর এদিকে চীন তাদের নিজস্ব উৎপাদিত জে-২০
অথবা জে-৩১ সফলভাবে কমব্যাট সার্ভিসে না
এনেই বা ব্যাপক উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু না করেই নতুন
নতুন স্টিলথ টেকনোলজি বেসড এয়ার ক্রাফ্ট
কনসেপ্ট বা মাঝেমধ্যে ৬ষ্ঠ প্রজন্মের
যুদ্ধবিমান আবার এখন ফ্লাংকারের স্টিলথ ভার্সন তৈরি বা উন্নয়নের বিষয়টি ঢালাওভাবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচার করে যাচ্ছে যা নিশ্চিতভাবে বিশ্ব সামরিক পরাশক্তির রাষ্ট্রগুলোর কাছে বিষয়টির
গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে
বা তাদের কাছে চীনের নিজস্ব উচ্চ প্রযুক্তির
যুদ্ধবিমান উন্নয়নের দূর্বলতা বা অপারগতা সুস্পষ্ট
ভাবে প্রকাশ হতে পারে বলে আমি মনে করি।
এছাড়া এতে করে চীনের জাতীয় নিরাপত্তা ও
আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বড় ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত
হওয়ার সমুহ সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে যা বলার
অপেক্ষা রাখে না।